বড় ডিপযুক্ত ফ্রিজের একচেটিয়া বাজার ওয়ালটনের
এবার রোজা শুরু হতে না হতেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে ফ্রিজের বাজার। তবে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে ক্রেতাদের চাহিদার ক্ষেত্রে। বড় ডিপের ফ্রিজ কিনছেন অধিকাংশ ক্রেতা। অন্য ব্র্যান্ডগুলোর বড় ডিপের ফ্রিজ তেমন একটা না থাকায় এক্ষেত্রে একচেটিয়া মার্কেট ওয়ালটনের। অন্যদিকে ঈদকে সামনে রেখে কমানো হয়েছে ওয়ালটন ফ্রিজের দাম।
অসহনীয় গরম আর রোজা-ঈদের কারণে ব্যাপকহারে বিক্রি হচ্ছে ফ্রিজ।
বিক্রেতারা বলছেন, হঠাৎ করেই ক্রেতা পছন্দের শীর্ষে চলে এসে এসেছে বড় ডিপযুক্ত ফ্রিজ। এর কারণ ক্রেতারা এখন আর আলাদা করে ডিপ ফ্রিজ কিনতে চাইছেন না। বিশেষ করে দেশে তৈরি ওয়ালটন এবং মার্সেল ব্র্যান্ডের ফ্রিজগুলোতে ডিপ অংশ অনেক বড়। যা আমদানি করা ফ্রিজে নেই। বড় ডিপ হওয়ার কারণে দুটি ফ্রিজ কেনার পরিবর্তে একটি ফ্রিজ কেনাকেই লাভজনক মনে করছেন ক্রেতারা।
স্টেডিয়াম মার্কেটে আবাবিল ইলেকট্রনিক্স এর ম্যানেজার রাজু আহমেদ বলেন, সম্প্রতি ক্রেতাদের মধ্যে বড় ডিপের ফ্রিজ কেনার প্রবণতা বেড়ে গেছে। আর বড় ডিপের ফ্রিজ মানেই ওয়ালটন। কারণ আমদানি করা ফ্রিজের ডিপ অংশ থাকে অনেক ছোট। ফলে মাছ মাংস রাখার জন্য আলাদা করে ডিপ ফ্রিজ কেনার প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওয়ালটন ফ্রিজের ডিপ অনেক বড় হওয়ায় ওয়ালটন এখন হট কেক।
বসুন্ধরা সিটিতে ওয়ালটন প্লাজা ম্যানেজার আকরামুজ্জামান অপু বলেন, এখন ক্রেতারা শোরুমে এসেই বড় ডিপের ফ্রিজ খোঁজেন। আগে যেটা এতটা লক্ষ্য করা যায়নি।
বাড্ডা প্লাজার ম্যানেজার মনির হোসেন জানান, বড় ডিপের ফ্রিজের ক্ষেত্রে একচেটিয়া বাজার এখন ওয়ালটনের। এখানেই অন্য ব্র্যান্ডগুলো মার খাচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে পণ্য সরবরাহ করছে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নির্বাহী পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়ায় আর্দ্রতা অনেক বেশি। ফলে খাবার টাটকা রাখতে ডিপ ফ্রিজের প্রয়োজনও বেশি। খাদ্যমান বজায় রাখার জন্য স্থানীয়ভাবে ডাইরেক্ট কুলিংয়ের ফ্রিজই বেশি উপযোগী। ফলে ডিপ অংশ বড় রেখে ডাইরেক্ট কুলিং বা ফ্রস্ট ফ্রিজ তৈরির উপর গুরুত্ব দিচ্ছে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের মার্কেটিং বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এমদাদুল হক সরকার জানান, তুলনামূকভাবে এবছর ফ্রিজের বিক্রি বেশি হচ্ছে। রোজা এবং ঈদকে সামনে রেখে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবেলায় নেয়া হয়েছে বেশ কিছু উদ্যোগ। মজুদও বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সর্বোচ্চ তিন বছরের কিস্তিতেও পাওয়া যাচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। দেশব্যাপী দেয়া হচ্ছে আইএসও স্ট্যান্ডার্ড আফটার সেল সার্ভিস।
ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে ওয়ালটন বিশেষ ডিজাইনে বড় ডিপের ফ্রিজ তৈরি করেছে। নিম্ন আয়ের মানুষ যাতে ফ্রিজ কিনতে পারে এজন্য যেমন ফ্রিজের দাম কমানো হয়েছে। তেমনি একটি ফ্রিজেই যেন একটি পরিবারের যাবতীয় চাহিদা পূরণ হয় সে বিষয়টি মাথায় রেখেছে। তার মতে, এক্ষেত্রে শতভাগ সফল ওয়ালটন।
কাজীপাড়া প্লাজায় ফ্রিজ কিনতে এসেছিলেন শাপলা শারমিন। তিনি জানালেন, শুনেছি ওয়ালটন ফ্রিজের ডিপটা অনেক বড়। তাছাড়া ফ্রিজের ভেতরের স্পেস অনেক বেশি। আর দামের ক্ষেত্রেও মনে হচ্ছে সাশ্রয়ী। অন্যান্য ব্র্যান্ডের কয়েকটা শোরুমেও গিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত ওয়ালটন নিচ্ছি।
এদিকে মালিবাগে ওয়ালটন প্লাজা ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বাতেন বলেন, গত মাসে ৩০০ ফ্রিজ বিক্রি করেছি। কিন্তু ক্রেতারা কেউ আফটার সেল সার্ভিস নিতে আসেন নি। দাম কমলেও ওয়ালটন ফ্রিজের মান আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। ক্রেতাদের আস্থাও বেড়েছে।
ওয়ালটন বাজারে এনেছে ৩০ থেকে ৩৫টি মডেলের আকর্ষণীয় কালারের ফ্রিজ। রমজান উপলক্ষ্যে ২৫৪ লিটারের একটি নতুন মডেলের ফ্রিজ বাজারে এসেছে। এছাড়াও রমজানের প্রথম সপ্তাহে আসছে ৩১৭ লিটার, ২৭৫ লিটার এবং ২৯৫ লিটারের নতুন মডেলের ফ্রিজ। নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত সকলশ্রেণির ক্রেতারা সামর্থ অনুযায়ী ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ফ্রিজ কিনতে পারবেন ১৭,৯৯০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৬৯,৯০০ টাকার মধ্যে।
ওয়ালটন ফ্রিজে ব্যবহৃত হয়েছে ন্যানো পার্টিকেলযুক্ত উন্নত প্রযুক্তি। এতে কোনো সিএফসি বা এইচসিএফসি নেই। রয়েছে ৮০ শতাংশ বিদ্যুত সাশ্রয়ী এলইডি বাল্ব। কপার কন্ডেন্সার ব্যবহারের ফলে ফ্রিজ হয় দীর্ঘস্থায়ী এবং বিদ্যুত সাশ্রয়ী।
এমএএস/আরআইপি