আটায় সন্তুষ্ট, আতপ চালেও অসন্তুষ্ট নন ক্রেতারা
‘অই মিয়া, আমাগোরে কি মানুষ মনে হয় না, এতক্ষণ লাইনে খাঁড়াইয়া রইছি কিন্তু আপনি খাতা থেকে চোখই তুলছেন না, আমরা রিলিফের গম-চাল ফাউ নিতে লাইনে খাঁড়াইছি।’
সোমবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর নিউমার্কেটের সামনে ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ কথাগুলো বলছিলেন লালবাগের নবাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মধ্যবয়সী মালেক মিয়া।
তার কথা শেষ হতে না হতেই বোরকা পরিহিত এক নারী পর্দা সরিয়ে বলে উঠলেন, ‘খালি তো পুরুষ মাইনষেরে দিতাছেন, আমাগোরে দিবেন কোন্ সময়।’
খাতা-কলম নিয়ে ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি তার অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা মানুষ মাত্র দুইজন। আমি নাম-ঠিকানা লিখে স্বাক্ষর ও টিপসই নেই। অন্যজন টাকা নেয়, বস্তা খুলে মেপে চাল-আটা দেয়। আপনারা ধৈর্য ধরেন, মাল আছে, পাবেন।’
চাল মেপে দিচ্ছেন খাদ্য অধিদফতরের এক ওএমএস বিক্রেতা
সরেজমিনে খাদ্য অধিদফতরের ওএমএস বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, শুরুর দিনের চেয়ে আজ চাল ও আটা দুটো পণ্যেরই চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে। উপচেপড়া ভিড় না থাকলেও সকাল থেকেই দিনভর লাইনে দাঁড়িয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুরা ক্রয় করেছে।
একজন ক্রেতাকে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল (প্রতি কেজি ৩০ টাকা) ও ৫ কেজি আটা (প্রতি কেজি ১৭ টাকা) দেয়া হচ্ছে। নাম-ঠিকানা লিখে স্বাক্ষর ও টিপসই রেখে তবেই চাল-আটা দেয়া হচ্ছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, ওএমএসের আটা কিনে তারা বেশি সন্তুষ্ট; তবে আতপ চালেও অসন্তুষ্ট নন।
আজিমপুর নতুন পল্টন লাইন এলাকার বাসিন্দা সালমা বেগম জানান, তিনি রোববার পাঁচ কেজি আটা নিয়ে গিয়েছিলেন। আটার মান ভালোই বলে জানান।
ক্রেতাদের নাম-ঠিকানা ও স্বাক্ষর নেয়া হচ্ছে
তিনি বলেন, আতপ চাল সবাই রান্না করতে পারে না। পাশ থেকে আরেক নারী বলে ওঠেন, আতপ চালের ভাত রাঁধতে বেশি পরিমাণ পানি দিতে হয়।
কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা এক বৃদ্ধা ট্রাকের সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে তাকে ১০ কেজি চাল দিতে অনুরোধ জানান। তবে বিক্রেতাদের সাফ কথা পাঁচ কেজির বেশি দেয়া যাবে না। অফিস থেকে বেশি পরিমাণ দেয়া হয়েছে জানলে চাকরি চলে যাবে। বৃদ্ধাকে এ সময় মন খারাপ করে সেখান থেকে চলে যেতে দেখা যায়।
এমইউ/জেডএ/আইআই