‘নৃশংসভাবে রোহিঙ্গা নির্মূল বন্ধ হওয়া প্রয়োজন’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৬ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মণি বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী সেখানকার জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের যেভাবে নৃশংসভাবে নির্মূল করছেন, অবিলম্বে তা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

একই সঙ্গে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমার ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্বের অধিকার দিয়ে নিরাপদে বসবাসের ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। এ ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের ওপর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের জোরালো কূটনৈতিক চাপ প্রয়োজন।

সোমবার জাতীয় সংসদে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অব্যাহত হত্যা ও নির্যাতন বন্ধে আনীত কার্যপ্রণালি বিধির-১৪৭ (১) বিধি অনুসারে আলোচনার নোটিশে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। পরে তার নোটিশ গৃহীত হওয়ার পর সংসদে এ নিয়ে সাধারণ আলোচনা চলছে।

দীপু মণি প্রস্তাব এনে বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অব্যাহত নির্যাতন নিপীড়ন চরম আকার ধারণ করায় সেখানকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ লোক ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সীমান্তের প্রতিটি পয়েন্টে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী নিষ্ঠুর নির্মমতার শিকার কেউ অর্ধমৃত, কেউ গুলিবিদ্ধ, কেউবা ক্ষত-বিক্ষত হাত-পা নিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু কোনো মতে জীবন নিয়ে ঢলের মতো প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন।

নাফ নদীতে ভাসছে সারি সারি রোহিঙ্গার মরদেহ। নিজ ভূমি থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূলের লক্ষ্যে চালানো অব্যাহত নৃশংসতায় গর্ভবতী মা-বোনসহ দুগ্ধপোষ্য শিশুকেও রেহায় দিচ্ছেন সেনাবাহিনী। তাদের আখ্যায়িত করা হচ্ছে বাঙালি সন্ত্রাসী হিসেবে। এদের প্রতিটির বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে যাতে নিজভূমিতে ফিরতে না পারে।

তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের অধিবাসী। তারা পাঁচশ বছরের অধিক সময় ধরে আরাকান রাজ্যে বসবাস করছেন।

দীপু মণি আরাকান রাজ্যের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতাব্দীতে আরাকান ছিল স্বাধীন মুসলিম রাজ্য। ১৪০৪ থেকে ১৬১২ সাল পর্যন্ত ১৬ জন মুসলিম সম্রাট আরাকান শাসন করেছেন। রাজা বোধাপোয়া ১৭৮৪ সালে আরাকান দখল করে তৎকালীন বার্মার সঙ্গে যুক্ত করেন। ১৯৪৮ সালে ইউনিয়ন অব বার্মা ব্রিটিশদের কাছ থকে স্বাধীনতা লাভের সময়ও আরাকান বার্মার অংশ থেকে যায়। ভৌগোলিক নৈকট্যের কারণে আরাকান রাজ্যের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের সাংস্কৃতিক বন্ধন বহু শতাব্দীর।

এইচএস/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।