উত্তরায় ফ্ল্যাট : দেড় বছর অপেক্ষার সঙ্গে গুণতে হবে বেশি টাকা


প্রকাশিত: ১১:৪৭ এএম, ১১ জুন ২০১৫

উত্তরা তৃতীয় ফেজে আবাসিক এ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ফ্ল্যাট বুঝে পেতে গ্রাহককে আরো দেড় বছর অপেক্ষা করতে হবে। সরকার গ্রাহকের ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে চায়। তবে আদো সেটি সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছেই। ১৮ নম্বর সেক্টরে নির্মাণাধীন এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ হাজার ফ্ল্যাট তৈরি করবে সরকার।

জানতে চাইলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, উত্তরায় ফ্ল্যাটসমূহের নির্মাণ সন্তোষ জনক পর্যায়ে রয়েছে। আমি আশা করছি, আগামী বছরের ১৬ ডিসেম্বর এসব ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে পারবো আমরা।

রাজউক সূত্র বলছে, উত্তরা তৃতীয় ফেজে ১৮ নম্বর সেক্টরে রাজউকের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ১৭৯টি ভবনে মোট ১৫ হাজার ৩৬টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে। মোট ২১৪ দশমিক ৪৪ একর জমির ওপর এ ভবনগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। মোট আয়তনের প্রায় ৪৫ শতাংশ জায়গা সবুজ বেস্টনি, স্কুল, খেলার মাঠ, মসজিদ, শপিংমল ইত্যাদি ছাড়াও বেসমেন্ট ও নিচতলায় গড়ি পার্কিং ও দৃষ্টিনন্দন লেক থাকবে এ প্রকল্প এলাকায়।

দুই ধরনের ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে এ প্রকল্পে। এর কিছু ফ্ল্যাট হবে ১২৫০ বর্গফুট ও কিছু ১০৫০ বর্গফুট আয়তনের। বর্তমানে রাজউক ৪০টি এবং গণপূর্ত বিভাগ ৩৯টি ভবন নির্মাণ করছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি ভবনের নয়তলা পর্যন্ত কাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট ১০০টি ভবনে আট হাজার ৪০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে মালয়েশিয়া সরকার।

গণপূর্ত মন্ত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ফ্ল্যাট নির্মাণে বিলম্ব দেখে যারা জমা দেওয়া অর্থ ফেরত নিয়েছে তাদেরকে পুনরায় অর্থ জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। অবশিষ্ট ফ্ল্যাটের জন্য জনসাধারণের মধ্যে দরখাস্ত আহ্বান করা হবে।

তিনি বলেন, ২০০০ সালে উত্তরা, পূর্বাচল ও ঝিলমিল আবাসিক এলাকায় প্রায় এক লাখ ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বিগত সময়ে একটি ফ্ল্যাটেরও নির্মাণ কাজ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এসব ফ্ল্যাট নির্মাণ সম্পন্ন হলে বিপুল সংখ্যক লোকের আবাসন সমস্যার সমাধান হবে।

এদিকে রাজউক সূত্র বলছে, রাজউক উত্তরাতে ফ্লাটের দাম বাড়াবে। তবে এসব ফ্ল্যাটের দাম কি পরিমাণ বাড়তে পারে সে বিষয়ে গণপূর্ত ও রাজউক থেকে বিস্তারিত চূড়ান্ত করেনি।

সূত্র বলছে, আগের দরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ায় নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরদাতারা আগের দরদাতাদের চেয়ে বেশি দাম উল্লেখ করে দরপত্র জমা দিয়েছে। যে কারণে ফ্ল্যাটের দাম বাড়বে। এই প্রকল্পে ‘এ’ শ্রেণির ফ্ল্যাটের জন্য আবার নতুন করে ৯টি লটে (একটি লটে তিনটি ভবন) দরপত্র আহ্বান শেষে নতুন করে ৫টি লটের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। আর বাকি লটগুলো দরপ্রস্তাবের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উত্তরা ফ্ল্যাট প্রকল্পের ৬১টি ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছিল সংসদ সদস্য এনামুল হকের প্রতিষ্ঠান এনা প্রপার্টিজ। আর ১৬টি ভবন নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের প্রতিষ্ঠান হামিদ রিয়েল এস্টেটকে।

কিন্তু এই দুই প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক না হওয়ায় রাজউক চুক্তি বাতিল করে। এরপর ৭৭টি ভবন নির্মাণের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেয় রাজউক ও গণপূর্ত বিভাগ।

চুক্তি বাতিল হওয়ায় দুটি প্রতিষ্ঠানের জামানত বাবদ ১২০ কোটি ৫৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২২৮ কোটি ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।

এসএ/আরএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।