এবার ‘ডন ভাই’র সন্ধানে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:১৭ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

‘দুর্ধর্ষ জঙ্গি’ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর এবার ‘ডন ভাই’র সন্ধানে নেমেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

রাজধানীর মিরপুরের মাজার রোডের বাঁধন সড়কের বর্ধনবাড়ি এলাকার ভাঙ্গাওয়াল গলির ছয়তলাবিশিষ্ট ‘কমল প্রভা’ বাড়িতে বিস্ফোরণের আগে একাধিকবার ওই ‘ডন ভাই’র সঙ্গে যোগাযোগ হয় ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহ’র।

তাদের কথোপকথন থেকে র‌্যাব ‘ডন ভাই’র বিষয়টি জানতে পারে। এখন ওই ‘ডন ভাই’র অনুসন্ধানে নেমেছেন র‌্যাব সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, নিহত ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে যোগাযোগের সময় ‘ডন ভাই’ নামের একজনের নাম উঠে আসে। তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, জঙ্গি আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে সহযোগী হিসেবে আরও ৫-৬ জনের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তাদের সম্পর্কেও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহ জেএমবি’র দুর্ধর্ষ লিডার ছিল। বাসাটির ষষ্ঠতলায় একটি ল্যাবের মতো আবহ তৈরি করে রেখেছিল। ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন বোমা সে এই ল্যাবেই তৈরি করত।

militent

তিনি বলেন, আজকের মতো (বৃহস্পতিবার) ক্লিনিং প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে বিরতি দেয়া হচ্ছে। আগামীকাল (শুক্রবার) সকালে ফের অভিযান শুরু হবে।

অভিযানের তৃতীয় দিনে ওই ভবনের ষষ্ঠতলার একপাশ থেকে ১০টি বড় বোমা, ৩০টি রাসায়নিকদ্রব্য মিশ্রিত বোতল বোমা, ১০ কেজি গানপাউডার, সালফিউরিক এসিডসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ৫০টিরও বেশি দেশীয় অস্ত্র, চাপাতি ও ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

ষষ্ঠতলার একপাশের ইউনিটের একটি কক্ষে ২৩টি বড় ফ্রিজ রয়েছে। এর পাশে আরও বেশকিছু কার্টন প্যাকিং করা আছে। এগুলোর ভেতরে বিস্ফোরক থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। সেগুলো আগামীকাল এক্স-রে মেশিন দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে।

এত বড় বিস্ফোরণ ও আগুনের পরও কীভাবে অন্য বিস্ফোরক অরক্ষিত থাকল- জানতে চাইলে মুফতি মাহমুদ বলেন, ষষ্ঠ তলায় ওঠার রাস্তাটি বন্ধ করে রাখা ছিল। যে কারণে সেখানে উঠতে পারেনি ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহ। ফলে বিস্ফোরণও ঘটাতে পারেনি।

প্রসঙ্গত, ‘কমল প্রভা’ বাড়িটির পঞ্চমতলায় দুই সন্তান ও দুই স্ত্রীসহ থাকতে ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহ। র‌্যাব ওই বাড়িটি ঘেরাও করার পরদিন মঙ্গলবার রাতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটান তিনি।

jasim

বুধবার ‘জঙ্গি আস্তানা’র ভেতর থেকে পুড়ে যাওয়া সাতটি মরদেহ উদ্ধার করে র‌্যাব।

নিহতদের মধ্যে ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহসহ তার দুই স্ত্রী নাসরিন ও ফাতেমা, দু্ই শিশুসন্তান ওসামা (১০) ও ওমর (৩) এবং তার দুই সহযোগী ছিল।

‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহর দুই সহযোগীর বিষয়ে তেমন কিছু জানাতে পারেনি র‌্যাব। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে কামাল (২২) নামে এক যুবকের খোঁজে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, নিখোঁজ কামাল আব্দুল্লাহর কর্মচারী ছিল। র‌্যাবের অভিযানের পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

‘জঙ্গি আস্তানায়’ বিস্ফোরণের পর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে একটি ‘অপমৃত্যু’ মামলা। দু’জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তারা হলেন- ভাঙ্গাওয়াল গলির নৈশপ্রহরী সিরাজুল ইসলাম (২৫) ও কমল প্রভা ভবনের মালিক হাবিবুল্লাহ বাহার আজাদ।

তাদের প্রসঙ্গে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, বাড়ির মালিক হাবিবুল্লাহ বাহার আজাদ ও নৈশপ্রহরী সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। নাশকতায় তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা মারা গেছেন তাদের পরিচয় এখনই জানা সম্ভব নয়। মেডিকেল পরীক্ষার পর তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।

জেইউ/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।