বৃষ্টির কারণে ফাঁকা রাজধানীতে যানজট!

জসীম উদ্দীন
জসীম উদ্দীন জসীম উদ্দীন , নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশিত: ০৪:৫০ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাতিরঝিল ঘুরবেন বলে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বিকেলে বেরিয়েছেন দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আহসান কবির। কিন্তু রামপুরা ব্রিজ যেতেই সময় লেগেছে ১ ঘ্ণ্টা। মোটরসাইকেল নিয়ে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা শুধু যানজটেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে তাদের। যানজট ভোগান্তির কারণে ঈদের আনন্দ যেন মাটি হবার দশা আহসান পরিবারের। শুধু আহসান পরিবারের সদস্যদেরই নয় রোববার এ রকম অসংখ্য মানুষকে ভোগান্তিতে পড়েছেন।

আহসান কবির বলেন, ঈদের দিন পরিবার নিয়ে ঘুরতে পারিনি। ঈদে তো রাজধানী ফাঁকা থাকে। পরিবার নিয়ে বেরিয়েছি হাতিরঝিল যাব। কিন্তু বৃষ্টিতে বেহাল রাস্তা আরও খারাপ হয়ে গেছে। এর ওপর যুক্ত হয়েছে যানজট।

2017August

ঈদুল আজহায় রাজধানী প্রায় ফাঁকা হয়ে গেলেও ভিন্ন চিত্র রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রী-আমুলিয়া সড়কে। বৃষ্টির কারণে বেহাল রাস্তার খানাখন্দ ভরে গেছে পানিতে। বোঝার উপায় নেই কোথায় রাস্তা ভাল কোথায় খারাপ। হেলে-দুলে রাস্তা পার হতেই মূলত: যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অন্য কোনো কারণ নেই বলছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।

ট্রাফিক কর্মকর্তারা জানান, রাস্তার বেহাল দশার কারণে যানচলাচলে ধীর গতি তৈরি হচ্ছে। চেষ্টা স্বত্ত্বেও যা নিরসন সম্ভব হচ্ছে না। বিবেকের তাড়নায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বার বার চিঠি লিখেছি। আশা করছি সহসাই সমাধান হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রী-আমুলিয়ার সড়কটির বেহাল দশার কারণে যান চলাচলে তৈরি হয়েছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ ও ভোগান্তি পেরিয়ে প্রতিদিন সন্তানদের স্কুলে ও স্ত্রীকে কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে হয়।

2017August

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গতবছর থেকে শুরু হয়েছে ভোগান্তি। যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রামপুরা-আমুলিয়ার বনশ্রী অংশের সড়ক। দু’পাশ উঁচু থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই ডুবে যাচ্ছে সড়কটি। সড়কে অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে পানিতে ডুবে গেলে যান চলাচল শুধু নয়, পথচারীদের জন্যও সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বনশ্রী ও রামপুরাবাসীর কাছে সড়কটি এখন যেন মরণফাঁদ।

সড়কে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ বলছেন, এ সড়কে সবসময় যানজট লেগে থাকে। যান চলাচল স্থবির হওয়ায় বনশ্রী ও মেরাদিয়ার মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে। ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ঘণ্টারও বেশি।

রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যা অবধি সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটিতে হেলে-দুলে খুবই ধীরে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। যানবাহন কম হলেও ধীরগতির কারণে তা দীর্ঘপথে যানজট তৈরি করেছে। যে কারণে রামপুরা ব্রিজে ওঠার আগে মেরুল বাড্ডাতেও চাপ পড়ে যানবাহনের।

2017August

পানি জমে থাকায় সড়কটির কোথায় গর্ত, কোথায় ভাঙা তা বোঝারও উপায় নেই। রাস্তাটির বেশ কটি স্থানে ভেঙে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনাও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে রিকশা ও সিএনজি চলাচলে বেশি সমস্যা হচ্ছে।

সড়কটির বনশ্রী অংশের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। ভোগান্তি স্বত্ত্বেও সড়কটির পুনর্নির্মাণ তো দূরের কথা সংস্কারের উদ্যোগও নেয়নি ডিএনসিসি। দিন দিন সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। জনভোগান্তি ও যানজট কমাতে বাধ্য হয়ে মাঝেমধ্যেই রাস্তা বন্ধ রাখছে ট্রাফিক পুলিশ।

বনশ্রী ‘ই’ ব্লকের বাসিন্দা ইমরুল কায়েস বলেন, বনশ্রীতে থাকা এখন পাপ। ভোগান্তির শেষ নেই। মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা পেরুতেই ঘ্ণ্টারও বেশি সময় লাগছে। যে কারণে এ এলাকা ছেড়ে দিচ্ছি। আগামী মাসে বাসা পরিবর্তন করে অন্য এলাকায় চলে যাচ্ছি।

এ ব্যাপারে ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মঈনুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তা ফাঁকা। যানবাহনও কম। তবুও যানজট তৈরি হয়েছে। এতে ট্রাফিক বিভাগের দায় নেই। বৃষ্টির কারণে রাস্তার খারাপ অংশ ডুবে গেছে। সাময়িকভাবে যান চলচালে গতি কমেছিল। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় যান চলাচল গতি ফিরেছে।

জেইউ/এমআরএম/এএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।