কালো টাকা বৈধতায় বিভ্রান্তি নিরসনের দাবি টিআইবি’র


প্রকাশিত: ০২:১০ পিএম, ০৫ জুন ২০১৫

২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় কালো টাকা সাদা করার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর কোন সুস্পষ্ট ঘোষণা না থাকায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সরকারের অবস্থান পরিস্কার করার দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

একই সঙ্গে সুস্পস্ট ঘোষণার মাধ্যমে কালো টাকা বৈধ করার সকল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুযোগ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। অন্যদিকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে যথাযথ ও কার্যকর উদ্যোগের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় কোন প্রকার দিকনির্দেশনা প্রদান না করায় হতাশা প্রকাশ করেছে।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কালো টকা সাদা করার সুযোগ প্রদান সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদ এর পরিপন্থী এবং রাজস্ব আদায়ের বিবেচনায় অর্থহীন। প্রভাবশালী মহলের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে বাজেটে কালো টাকাকে বৈধতা দেবার অনৈতিক, অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক পথে অর্থমন্ত্রী যাবেন না বলে আমরা আশা করেছিলাম। তবে বাজেট বক্তৃতায় বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার ফলে এ বিষয়ে জনমানুষের মনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ভিন্ন কৌশলে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে যা দুর্ভাগ্যজনক এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বহুবার ঘোষিত দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের পরিপন্থী। রাষ্ট্রের নীতি-কাঠামো যেভাবে ক্রমাগত দুর্নীতি সহায়ক শক্তির করায়ত্ত্ব হতে চলেছে, দুর্নীতির প্রভাবে সততা, নৈতিকতা ও আদর্শ যেভাবে পদদলিত, এই অবস্থায় কালো টাকা বৈধতার সুযোগ চিরতরে বন্ধ করার সুস্পষ্ট ঘোষণার মাধ্যমে সরকার জনগণের আস্থা অর্জনে একধাপ এগিয়ে যেতে পারত।

বাজেটে শিশু কল্যাণে প্রথমবারের মতো অর্থ বরাদ্দ রাখায় সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের সিঁড়িতে উন্নত দেশে নিয়ে যাওয়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন তা আমাদের মনে আশার সঞ্চার করেছে। তবে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা, বৈষম্য নিরসণ তথা মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অপরিহার্যতা উপেক্ষা করে উন্নয়ন ও মধ্যম আয়ের দেশের তালিকাভুক্তির স্বপ্ন আপাত দৃষ্টিতে সম্ভব বিবেচিত হলেও স্থায়িত্বের সম্ভাবনার মাপকাঠিতে তা স্বপ্ন বিলাস হিসেবে রুপান্তরিত হবার ঝুঁকি রয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হতে পারে, কিন্তু দরিদ্র, বৈষম্যের শিকার ও সুবিধা-বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বার্থকে অধিকতর প্রাধান্য দেওয়া উচিত ছিল।

অন্যদিকে জলবায়ু তহবিলে মাত্র ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ অপ্রতুল মনে করছে টিআইবি।”

বাজেট বক্তৃতায় রূপকল্প ২০২১ এর ধারাবাহিকতায় এই মেয়াদের মধ্যেই জাতিকে নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপকল্প ২০৪১ উপস্থাপনের যে কথা বলা হয়েছে সে বিষয়ে মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি করা খুবই জরুরি। বাজেট বক্তৃতায় দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজনৈতিক অঙ্গীকার, প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ বিষয়ে বিশেষত সরকারের দুর্নীতি-বিরোধী দলিল জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বা তার বাস্তবায়ন সম্পর্কে কোনো বক্তব্য না থাকায় ড. জামান বিস্ময় প্রকাশ করেন।

তিনি আরো বলেন, টিআইবি মনে করে সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের লক্ষে বিশেষ আইন প্রণয়ন করা জরুরি। একইভাবে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং নিরীক্ষা কার্যক্রমে কার্যকরতা নিশ্চিতে প্রস্তাবিত খসড়া ‘অডিট আইন’ অংশীজনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত অনুমোদনেরও দাবি জানায় টিআইবি।

জেইউ/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।