ঝুপরি ঘরে থেকেও আসমার জিপিএ-৫
আসমা আকতার। দারিদ্র্যতার সঙ্গে বসবাস করা এক মেধাবী ছাত্রীর নাম। জয়পুরহাট শহরের কাশিয়াবাড়ী মহল্লার হত-দরিদ্র আব্দুল আজিজের বড় মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় প্রতিটি শ্রেণিতে ১ম স্থান অর্জন করে সর্বশেষ এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়েছে। এর আগে ৫ম শ্রেণিতেও পেয়েছিল ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি।
বুধবার সকালে সরেজমিনে এ মেধাবী ছাত্রীর খোঁজ নিতে তার বাড়িতে গেলে দেখা যায়, পুরনো টিন দিয়ে তৈরি ঝুপরি ঘর ও ছাউনিতে বাড়িটি একেবারেই খসে পড়ছে। তার উপর গত ঘূণিঝড়ে ঘরের আরো বেহাল দশা হয়েছে। ছোট পরিসরের একটি রুমে মা-বাবা-ভাই-বোনদের নিয়ে গল্প আলাপ করছিল আসমা অকতার।
তারা জাগো নিউজকে জানান, মেয়ে আমাদের কৃতিত্বের সাথে পাস করেছে। এখন চিন্তা ভাল কলেজে কিভাবে ভর্তি করাবো। আসমার গৃহিণী মা সম্পা বেগম জানান, গৃহকর্তার (আসমার বাবা) ফুটপাতে ডাব বিক্রির টাকা দিয়ে ৩ ছেলে-মেয়েসহ ৫ জনের সংসারই চলে না। তারপরও মেয়ের ইচ্ছা শক্তির কথা চিন্তা করে লেখাপড়াটা কোনমতে চালিয়ে আসছি। কিন্তু তার ভাল ফলাফলের পর উচ্চ শিক্ষার ব্যয়ভার কিভাবে বহন করবো এমন চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে আসমা ও তার বাবা।
এ ব্যাপারে আসমা আকতার জাগো নিউজকে জানায়, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছি। কিন্তু অর্থের অভাবে মানবিক বিভাগে পড়তে হবে। স্বপ্ন ছিল ডাক্তারী লাইনে পড়াশুনার। কিন্তু অর্থের অভাব সেই স্বপ্ন পূরণে বাধা দিচ্ছে। তারপর থেমে থাকবো না। যুদ্ধ করে হলেও মানবিক বিভাগে পড়াশুনা শেষ করে শিক্ষক হতে চাই। জানি না দরিদ্র বাবা এ স্বপ্ন পূরণে কতটুকু সহায়তা করবেন।
জয়পুরহাট কাশিয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জাগো নিউজকে বলেন, অত্যন্ত মেধাবী এই ছাত্রীটি আমার বিদ্যালয়ের গর্ব। তার মত দরিদ্র মেধাবীদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসাটা খুবই জরুরি।
এসএস/এমএস