বন্যার প্রভাব পড়বে না কোরবানির পশুতে
ঈদুল আজহায় কোরবানির ক্ষেত্রে বন্যার কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
তিনি বলেন, এবারের বন্যায় বেশ কয়েকটি জেলায় গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কিছু জায়গায় গরু, ছাগল, ভেড়া মারা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে তাতে বন্যার কারণে কোরবানির পশুর ঘাটতির কোনো সম্ভাবনা নেই।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ) ‘দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত’ শীর্ষক এক সেমিনার শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে যে রিপোর্ট পাচ্ছি তাতে প্রাণিসম্পদের বড় ধরনের কোনো ক্ষতির খবর নেই। বন্যাকবলিত এলাকায় খাবারের কিছু সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরকে বিভিন্ন স্থানে খাবার সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় খুবই কঠিন অবস্থা সেখানে খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের কোনো আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, খামারিদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে খামারিদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা মূল্যায়ন করা হবে। যদি খামারিরা দুর্বল হয়ে পড়েন এবং তারা খামার পরিচালনা করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। যাতে তাদের খামারগুলো চালু থাকে।
এবার কোরবানি উপলক্ষে ভারতীয় গরু আসবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় গরু ব্যাপকভাবে আসার কোনো সম্ভাবনা আমি দেখি না। এখন আইনগত বিষয়টি ঠিক থাকলে ভারতের গরু আসার তেমন সম্ভাবনা নেই।
‘ভারতের গরু আসার পক্ষে আমরাও নই। কারণ আমরা এখন যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, তাতে প্রাণিসম্পদেও আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠছি। এমন অবস্থায় বাইরে থেকে পশু আমদানি করা না হলে খামারিরা উৎসাহিত হবেন এবং তারা তাদের উৎপাদনে আরও বেশি মনোযোগী হবেন।’
তিনি আরও বলেন, গত বছর পশু কোরবানি হয় এক কোটি চার লাখ। এবার আমাদের প্রস্তুত আছে এক কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার পশু। এগুলো নিবন্ধিত, এর বাইরেও কোরবানির পশু আছে। আমরা ধরে নিতে পারি, প্রতি বছর কোরবানি দেয়া লোকের সংখ্যা বাড়ে। এ হিসাবে এবার এক কোটি ১০ লাখ থেকে এক কোটি ১৫ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে।
‘দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত’ শীর্ষক সেমিনার পিকেএসএফ ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এ সমঝোতা স্মারকের শর্ত অনুযায়ী, প্রতি বছর টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও অনলাইন এই তিনটি সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকদের জন্য নয়টি সম্মাননা প্রদান করা হবে।
পিকেএসএফ সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল আনোয়ার, পিকেএসএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম, ইআরএফ’র সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে ভুল উল্লেখ করে পিকেএসএফ সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচন করা যায় না। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে একজনকে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়। কিন্তু তার প্রয়োজন ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তহলে সে কী করবে, সে তো এটা ভেঙে খাবে।
এমএএস/এমএআর/জেআইএম