বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:২২ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০১৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল এদেশের শোষিত বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করা। মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলেন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে অয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, কি অপরাধ করেছিলেন আমার মা, ১০ বছরের মাসুম বাচ্চা রাসেলের। শেখ কামাল, শেখ জামাল ও তাদের স্ত্রীর কি অপরাধ ছিল। পরিবারের অন্য সদস্য যারা ছিলেন, তাদের কেন হত্যা করা হলো?

শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতির ভাগ্য নিয়ে যারা বার বার ছিনিমিনি খেলেছেন, তারা এ দেশের মানুষের ভালো দেখতে পারেন না। এদেশের মানুষের জন্য যখনই কেউ ভালো কিছু করার চেষ্টা করে, তখনই তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। তিনি বলেন, এখনও সে ষড়যন্ত্র চলছে। ১৫ আগস্টের আগে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা হয়েছে। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যাই করেনি, তার নাম নিশানা যাতে না থাকে সে জন্য বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।

জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে রেডিও টেলিভিশনে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছে। অতি সুক্ষুভাবে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অপবাদও দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করাটা যেন অপরাধ হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাক যখন রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন, তার পর পরই জিয়াউর রহমানকে সেনা প্রধান বানান। জিয়া ক্ষমতায় এসে এক সঙ্গে তিনটি পদ দখল করেছিলেন। রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসেই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। কয়েকজন খুনিকে বিদেশে রাষ্ট্রদূত করা হয়েছিল। খুনিদেরকে সংসদে সদস্য বানানো হয়েছে। জিয়া শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য এ সব করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা গণহত্যা চালিয়েছে, পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছে, যারা মা বোনকে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছে, বাড়ি ঘরে আগুন দিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে, জিয়া সেই সব খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। জিয়া তাদের পুরস্কৃত করেছে। আর তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছে। কেন তারা এ কাজগুলো করেছে, কিসের জন্য প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। আজ কোনো পরিবারে কিছু হলে, তারা আমার কাছে বিচার চান। কিন্তু আমি দীর্ঘদিন বাবা মা হত্যার বিচার চাইতে পারিনি। যারা জাতির জনককে হত্যা করেছে, তাদের কি জাতি ঘৃণা করবে না?

সভায় ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর একটি কবিতা পাঠ করে শোনান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান আগস্টের ওপর লেখা বিষাদ সংগীত গেয়ে শোনান।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, শহীদ তাজউদ্দীনের কন্য সিমিন হোসেন রিমি, বিশিষ্ট সাংবাদিক কলামিস্ট আবেদ খান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ও অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

এফএইচএস/জেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।