ভালো ফল করেও ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত সিলেটে


প্রকাশিত: ১০:০৩ এএম, ০৩ জুন ২০১৫

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েও এবার পছন্দের কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সিলেটের শিক্ষার্থীরা। আর এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরাও। আবার ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়েও অন্ধকারে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় আগামী ৬ জুন থেকে শুরু হচ্ছে অনলাইনে একাদশ শ্রেণির ভর্তির আবেদন। চলবে ১৮ জুন পর্যন্ত।

অনলাইনে শিক্ষার্থীর আবেদনের পছন্দক্রম থেকে তার এসএসসি ও সমমানের ভিত্তিতে একটি কলেজ নির্ধারণ করা হবে, যেখানে শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে হবে। তবে আগের মতো টেলিটকে খুদে বার্তা পাঠিয়েও আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছে।

সিলেট শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা যায়, যদিও এবার সিলেট বিভাগে ২৬৯টি কলেজে এক লাখ ১৪ হাজার ২২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। তবে মানসম্পন্ন কলেজের সংখ্যা হাতে গুণা কয়েকটি। আর এ কলেজগুলোর আসন সংখ্যাও আবার সীমিত। তাই ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারা নিয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে ২৩ হাজার ১৫০,  ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৩২ হাজার ১৫০ ও মানবিক বিভাগে ৫৮ হাজার ৯২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। তবে, আরো দুটি কলেজের অনুমোদন ও আসন সংখ্যা বাড়ানো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

এবার সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ৭২ হাজার ২৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ৫৮ হাজার ৯৩৭ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৪৫২ জন। এর মধ্যে প্রায় সকলেরই পছন্দ শহরের কলেজগুলো। গ্রামের কলেজগুলোর আসন পূরণ না হলেও পছন্দের নামিদামি কলেজে ভর্তি নিয়ে দেখা দেবে দৌঁড়ঝাপ। তবে বোর্ড নির্ধারণ করে দেওয়ায় অনেকেই বাদ পড়তে পারে পছন্দের তালিকা থেকে।

বিগত কয়েক বছরের মতো এবারো মাধ্যমিকের ফলের ভিত্তিতেই একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির বিধান রেখে ১ জুন নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো কলেজ চাইলে তাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করতে পারবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলেজে ছাত্রীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে আগামী ৬ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে এসএমএসে আবেদন করতে হবে। যারা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন, তাদের জন্য ২১ জুন পর্যন্ত সুযোগ থাকবে। ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা ২৫ জুন প্রকাশ করা হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে।

টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএস করে ১৫০ টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। সর্বোচ্চ পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পছন্দক্রমে রাখতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদনে খরচ পড়বে ১২০ টাকা।

নীতিমালায় আরো বলা হয়, সাতটি বিভাগীয় সদরের কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজের ৯০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অবশিষ্ট ১০ শতাংশ আসনের মধ্যে ৩ শতাংশ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সদরের বাইরের এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পদের সদস্যদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

বিভাগীয় শহর ছাড়া জেলা শহরের কলেজেও ৯০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে বলেছে মন্ত্রণালয়। বাকি ১০ শতাংশ বিভাগীয় সদরের কলেজের মতো একইভাবে পূরণ করা হবে। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সব বিষয়ের উপর সর্বোচ্চ ৪৮ গ্রেড পয়েন্ট ধরে জিপিএর ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করতে হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফি’র বেশি নেওয়া যাবে না উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ফি নিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ শামীম জাগো নিউজকে জানান, সিলেটে পর্যাপ্ত আসন রয়েছে। ভর্তিতে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। শহর আর গ্রাম নয়, এখন সব কলেজেই ভালো পড়াশোনা হয়। আর প্রাইভেট কলেজগুলোও এখন ভালো করছে।

ছামির মাহমুদ/এআরএ/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।