সব পথ মিশে গেল বঙ্গবন্ধু ভবনে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:১৩ এএম, ১৫ আগস্ট ২০১৭

রাজধানীর সব পথ মিশে গেল ৩২ নম্বরের দিকে। গন্তব্যস্থল একটাই সেটা হলো বঙ্গবন্ধু ভবন। চারদিক থেকে স্রোতের মতো মানুষ আসছে। চারপাশে শুধু কালো রঙের সমাহার। সহস্র কালো রঙের ব্যানার। অনেকের পাঞ্জাবি ও অন্য পোশাকের রঙও কালো। কেউ কেউ এসেছেন কালো গেঞ্জি পরে, কেউবা ধারণ করেছেন কালোব্যাজ। শোকের প্রতীক এ কালো রঙ ধারণ তার জন্য যিনি জাতিকে দিয়েছেন একটি মানচিত্র। যিনি দিয়ে গেছেন একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। সেই মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার ছিল বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী। এজন্য ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নেমেছে শোকার্ত জনতার ঢল। গভীর শ্রদ্ধা ভরা চিত্তে জাতি স্মরণ করছে তার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। চারদিকে ছিল শুধু একটাই ধ্বনি জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাবা তোমার স্মরণে ভয় করি না মরণে। এছাড়া শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি শোকার্ত জনতা অবিলম্বে বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে বিচারের আওতায় আনার দাবি তোলেন উচ্চকণ্ঠে।

সকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের সামনে স্থাপন করা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। এরপর রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এলাকা ত্যাগ করার পরই বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনের রাস্তা উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সর্বস্তরের জনতার জন্য। এরপর থেকে রাজধানীর সব পথ যেন মিশে যায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ৬৭৭ নম্বর বাড়িটির দিকে। কে আসেনি আজ এখানে? যুদ্ধাহত পৌঢ় মুক্তিযোদ্ধা, ঘরের মাঝে আবদ্ধ থাকা গৃহবধূ কিংবা বাবার কোলে চড়ে ছোট শিশু- সবাই এসেছে জাতির জনককে নিজেদের ভালোবাসার অর্ঘ্য নিবেদন করতে।

বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করা সেই মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে বঙ্গবন্ধু ভবন, রাসেল স্কয়ারসহ আশপাশের এলাকা। হাতে কালো ব্যানার ও বুকে কালোব্যাজ ধারণ করে নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষ এসেছে ৩২ নম্বরে। সবাই পরম শ্রদ্ধায় প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে জাতির জনককে স্মরণ করেছেন।

৩২ নম্বরের মতো রাজধানীর বনানীতেও ছিল এ্কই চিত্র। সকাল সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রী বনানীতে শায়িত শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করার পর ৭টা ৪০ মিনিটে এলাকা ত্যাগ করেন। বনানী কবরস্থানে প্রবেশের জন্য মানুষ যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছিল। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা, দফতর, অধিদফতর, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ ছাড়া রাজধানীর প্রায় সব রাস্তায় শোকের প্রতীক কালো পতাকার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও তোরণ তৈরি করা হয়। মাইকে বেজেছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণসহ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণামূলক দেশাত্মবোধক গান। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে রান্না করা হয়েছে খিচুড়ি। এসব খাবার গরিব দুঃখীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতারা।

এফএইচএস/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।