বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ : ৪০ মেগাওয়াট পাওয়ার সম্ভাবনা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। বর্জ্যকে সম্পদে রূপ দিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগের পরিকল্পনা আলোর মুখ না দেখলেও আবার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে ডিএসসিসি।
এর আগে ২০১৩ সালে বর্জ্যকে সম্পদে রূপ দিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তবে নানা জটিলতায় প্রকল্পটি আটকে যায়। সম্প্রতি আবারও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
প্রায় ৭২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ইতোমধ্যেই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এ প্রকল্পের মাধ্যমে সম্ভাব্য উৎপাদিত ৩৫ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের মূল্য ১৬-১৯ (পার কিলোওয়াট) টাকা পড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক এয়ার কমডোর মো. শফিকুল আলম জাগো নিউজকে জানান, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি বার্ণ প্ল্যান্ট বা ফায়ার প্লেস নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল ডিএসসিসি। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩৫- ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে রাজধানীর মাতুয়াইলে ৮১ দশমিক ৩ একর জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য গত বছরের মে মাসে মন্ত্রী পরিষদ সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১৫ কোটি টাকা।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, ডিএসসিসি এলাকার বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিভিন্ন দেশ থেকে ১৫টি প্রস্তাব এসেছে। সরকারের এ প্রকল্পে কাজ করার জন্য- দক্ষিণ করিয়া, থাইল্যান্ড, জার্মান, ফিনল্যান্ড ও ইংল্যান্ডসহ আরও ১০টি দেশ ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছে।
ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক শফিকুল আলম জানান, মূল লক্ষ্য বর্জ্যের পরিমাণ কমিয়ে আনা। বর্জ্যের জন্য কম জায়গা ব্যবহার করা। বর্তমানে ৯০ একর জমি দরকার হয় বর্জ্য ফেলতে। প্রকল্পের কাজ শুরু হলে এক একর জমি দরকার হবে বর্জ্যের জন্য। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ বছর নির্ধারণ করা হবে কোন প্রক্রিয়ায় ও কোন দেশ বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রিফিউজ ডিরাইভড ফুয়েল (প্রত্যাখ্যাত উদ্ভূত জ্বালানি) নামক প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পিডিবিকে দেয়া হবে। পরবর্তীতে পিডিবির মাধ্যমে ডিএসসিসির বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করা হবে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এ প্রকল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত ৩৫-৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের মূল্য ১৬-১৯ (পার কিলোওয়াট) টাকা পড়বে।
এএস/এমআরএম/এএইচ