নানা সমস্যা নিয়ে চলছে শরীয়তপুর জেলা কারাগার
নানা সমস্যা নিয়েই চলছে শরীয়তপুর জেলা কারাগার। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত কারাবন্দী থাকার কারণে কয়েদী ও হাজতিরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কারাগারে কয়েদী সংখ্যা বাড়লেও তাদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা বাড়ানো হয়নি।
১০০জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এ কারাগারটি ১৯৮২ সালে তৈরি করা হয়। বর্তমানে কারাগারটিতে ২৮০জন কয়েদী রয়েছে বলে জানিয়েছেন কারাগারের জেল সুপার এএসএম কামরুল হুদা।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে কারাগারে কয়েদী-হাজতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা নুতন ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছি।
কারাগারের অভ্যন্তরে মাদক পাচারের অভিযোগ সম্বন্ধে তিনি বলেন, আমি শুনেছি এক সময় এখানে মাদক সরববাহ হতো কিন্তু আমরা দু’জন আসার পরে এ ধরনের ঘটনা ঘটে নাই। তবে অন্য কারাগারে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত কয়েকজন কারাবন্দীকে এখানে বদলি করা হয়েছে। তাদের দিকে আমি এবং জেলার সাহেব দু`জনেই নজরদারি করছি।
কারাগারে অবস্থানকারী কয়েদী সালাহ উদ্দিন সাগর বলেন, জেলখানায় কিছু সমস্যা তো থাকবেই। বরিশাল জেলখানার চেয়ে এখানে খাবার মান ও সুযোগ সুবিধা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো। এটা জোড় দিয়ে বলতে পারি।
কারা অভ্যন্তরে থাকার স্থান নির্ধারণে কয়েদী-হাজতিদের নিকট থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে জেলার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, আগে কি হতো জানি না। আমি এবং সুপার সাহেব এখানে যোগ দেয়ার পর থেকে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে নি। তবে আপনাদের মতো আমরাও শুনেছি ছিট বিক্রি করে টাকা নেয়া হতো। কারাবন্দীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় অনেক বন্দী বাইরে ভাড়া থাকে। যদি কারগারের সীমানার ভিতরে বন্দীদের আবাসন ব্যবস্থা করা যায় তাহলে অনেক অনিয়ম দূর করা সম্ভব হবে।
জেল সুপার বলেন, আমি খুব কষ্টে রাত্রী যাপন করি। আমার নিজের কোন আবাসন নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে থাকা সম্ভব হচ্ছে না।
কারাগারে প্রতিদিন প্রতি কয়েদী-হাজতির খাবারের জন্য ৬৫.৫০ টাকা খরচ হয় এবং জেলার প্রতি বেলার খাবার পরীক্ষা করে মানসম্মত হলে কয়েদী-হাজতিদের খাবার সরবরাহ করেন। বর্তমানে এই কারাগারে কোন কিশোর অপরাধী নেই। নেই কোন শিশু । মহিলা হাজতি আছে ৮ জন এবং মহিলাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দৃঢ় করা হয়েছে।
আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, কারাগারে দর্শনার্থীদের নিকট থেকে ২০ টাকা করে নেয়া হয়।
এ বিষয়ে জেল সুপার জানান, টাকা নেয়ার কোন বিধান নেই। কেউ নিয়ে থাকলে আমি ব্যবস্থা নেব। তবে টিকেট বুথে একটি মসজিদের দান বাক্স আছে। ওখানে কেউ ইচ্ছে করে দান করলে আমাদের আপত্তি নেই।
এসএস/এমএস