হাজিদের জন্য অনুসরণীয় পরামর্শ
বাংলাদেশ থেকে এ বছর মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে যাবেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। গত ২৪ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে হজ ফ্লাইট। চলবে আগামী ২৮ আগস্ট পর্যন্ত।
এছাড়া প্রথম ফিরতি হজ ফ্লাইট আগামী ৬ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ৫ অক্টোবর। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১ সেপ্টেম্বর হজ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ হজ অফিস হাজিদের জন্য অনুসরণীয় কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো হাজিদের অনুসরণ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
১. মক্কা-মদিনা পৌঁছার পর আপনার জন্য নির্দিষ্ট হোটেল/বাড়ির নির্ধারিত কক্ষে অবস্থান করতে হবে। লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যাবেন না। হাজি অবস্থানের হোটেল/বাড়িতে রান্না এবং কাপড় ইস্ত্রি করবেন না।
২. মোয়াল্লেম অফিসের দেয়া কার্ড এবং হজ অফিস থেকে দেয়া বাংলাদেশের পতাকা খচিত ছবিসহ আইডি কার্ড, হাতের কবজি বেল্ট সবসময় সঙ্গে রাখবেন। কবজি বেল্ট এবং আইডি কার্ড ছাড়া হোটেলের বাইরে যাওয়া যাবে না।
৩. হোটেল/বাড়ি থেকে বাইরে যাওয়ার সময় একা যাবেন না। সব সময় দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করবেন।
৪. চলা-ফেরার সময় পোশাক-পরিচ্ছদ এবং আচার ব্যবহারে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হয় এ ধরনের কোনো কাজ করবেন না।
৫. হোটেল কক্ষে টাকা-পয়সা সাবধানে রাখতে হবে। তাওয়াফ/সায়ী এবং শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে যাওয়ার সময়, হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বেশি টাকা-পয়সা সঙ্গে নেবেন না।
৬. সবসময় আপনার জন্য নির্ধারিত হজগাইডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।
৭. সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবেন। খালি পায়ে হাঁটবেন না। এতে পায়ে ফোসকা পড়তে পারে। রৌদ্রে ছাতা ব্যবহার করুন। প্রচুর পানি/ফলের রস পান করবেন। ডাস্টবিন ছাড়া অন্য কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেলবেন না।
৮. জিলহজ মাসের ৭ তারিখ রাতে অথবা ৮ তারিখ সকালে মিনা যেতে হবে। যাওয়ার সময় সঙ্গে হালকা কাপড়-চোপড় ও প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা নেবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে বাদ বাকি টাকা-পয়সা মোয়াল্লেমের অফিসে রেখে রসিদ নেবেন।
৯. মক্কা হতে হেঁটে মিনা-আরাফাতে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এতে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।
১০. শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার সময় দলবদ্ধভাবে যাবেন। পাথর মারার সময় কখনো স্যান্ডেল খুলে গেলে, পাথর হাত থেকে পড়ে গেলে কোনো অবস্থাতেই উঠানোর চেষ্টা করবেন না। কিছু অতিরিক্ত পাথর রাখবেন। অক্ষম, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের পক্ষে অন্যের দ্বারা পাথর নিক্ষেপ করা যায়।
১১. মিনা-আরাফাতে নিজের তাঁবু হারিয়ে গেলে হজ অফিসের তাঁবুতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এজন্য মিনা-আরাফাতের ম্যাপ সঙ্গে রাখবেন এবং আপনার তাঁবুর পাশের খুঁটি নম্বর জেনে রাখবেন।
১২. মিনা-আরাফাতে অবস্থানকালে পরিমিত খাবার গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করবেন। সবসময় পানির বোতল সঙ্গে রাখুন। ডায়াবেটিস রোগীরা সবসময় কিছু খাবার সঙ্গে রাখবেন।
১৩. মিনা-আরাফাতে অবস্থানকালে ধূমপান, হিটার ও আগুন জ্বালানো থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন।
১৪. মোজদালেফায় অবস্থানের জন্য বাস থেকে নামার পর পুনরায় কখন, কোনো জায়গা থেকে বাসে উঠবেন তা জেনে নেবেন। মোজদালেফায় দলবদ্ধভাবে অবস্থান করবেন।
১৫. কোরবানির টাকা ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকে জমা দেয়াই সৌদি সরকার কর্তৃক স্বীকৃত ব্যবস্থা। অন্যথায় প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
১৬. সৌদি আরবে রাস্তা পারাপারের সময় দৌড় দেবেন না। ডানে বামে দেখে রাস্তা পার হবেন। সৌদি আরবে গাড়ি ডান দিক থেকে চলে।
১৭. বাংলাদেশ বিমানে দুই ব্যাগে ৪৬ কেজি মালামাল নেয়া যাবে। কোনো ব্যাগের ওজন ৩০ কেজির বেশি করবেন না।
১৮. জমজমের পানি লাগেজে নেবেন না। ফেরার পথে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে বোর্ডিং পাস দেখিয়ে জমজমের পানি সংগ্রহ করবেন।
১৯. যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে মক্কা/মদিনা/জেদ্দা হজ অফিসে যোগাযোগ করবেন। আপনার যে কোনো পরামর্শ/সমস্যা ৮০০১১৬০০২৯০ টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে জানাতে পারেন।
২০. বর্তমানে সৌদি আরবে মোবাইল সিম সংগ্রহ করতে পাসপোর্টে জেদ্দা ইমিগ্রেশন থেকে লাগানো স্টিকারে উল্লিখিত নম্বরের প্রয়োজন হয়। এ নম্বর প্রদর্শন করে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে মোবাইল সিম কিনতে হবে।
২১. সম্মানিত হাজিদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত। জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য ০৫৪৮১০৫৪৪৯ নম্বরে ফোন করুন।
এমইউ/জেএইচ/আরআইপি