বদলে যাচ্ছে পুরান ঢাকা
পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকাকে আধুনিক নগরে পরিণত করতে যাচ্ছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঘিঞ্জি ও জরাজীর্ণ চেহারার পরিবর্তে প্রশস্ত রাস্তা ও বহুতল ভবনে রূপ নেবে পুরান ঢাকা।
জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই রাজধানীর পুরান ঢাকাকে আধুনিক শহরে রূপ দেয়ার লক্ষ্যে রাজউক আরবান রি-ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে এ কাজ সম্পন্ন করবে। সেই লক্ষ্যে জমির মালিকদের সমন্বয়ে ব্লকভিত্তিক নগর গড়ার প্রাথমিক প্রকল্পের কাজের পরিকল্পনা সম্পন্ন করেছে রাজউক।
মালিকরা চাইলে আরবান রি-ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অধীনে ছোট ছোট বাড়ি ভেঙে একাধিক বহুতল ভবন করা হবে । সেই সঙ্গে ২০০ ফুট করে বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলা হবে। পুরান ঢাকার বংশাল এলাকার জমি মালিকদের সঙ্গে এই পরিকল্পনার প্রাথমিক আলোচনা করেছে রাজউক। বিষয়টি নিশ্চিত করে এই প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক আলোচনায় সাড়া পাওয়া গেছে। সর্বনিম্ন ৫ বিঘা জমি নিয়ে এই ব্লকভিত্তিক এলাকা গড়ার আলোচনা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে মালিকরা যদি সম্মিলিতভাবে সম্মতি দেয় তাহলে নির্দিষ্ট এলাকাগুলোতে এ প্রকল্পের কাজ করা হবে।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, এলাকাবাসীর মতামত নিয়ে অল্প জমিতে নাগরিকদের সবে সুবিধা নিশ্চিত করে বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তোলা হবে পুরান ঢাকাকে। একই এলাকায় জমির মালিকরা বসবাস ও ব্যবসা করতে পারবে এই প্রকল্পের আওতায়। সেভাবেই ম্যাপ তৈরি করছে রাজউক।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, পুরান ঢাকার মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই এলাকায় জরিপ কাজও শুরু হয়েছে। এখন মেয়র ও ওয়ার্ড কমিশনারদের সমন্বয় করে কাজে হাত দেব। এর আগে জমি মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বোঝাতে হবে তারা কি ধরনের সুবিধা পাবেন। ব্লকভিত্তিক করা হবে পুরান ঢাকাকে। ওই ব্লকে স্কুল, হাসপাতাল, ৫০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা এবং এলাকার ভেতরে ৩০ ফুট প্রশস্ত রাস্তার ব্যবস্থাসহ বাচ্চাদের খেলার মাঠের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।
রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) ও উপ-নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের পুরান ঢাকাকে আধুনিক মেগা প্রকল্পের আওতায় এনে আরবান রি-ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে পুরান ঢাকা বদলে যাবে। তখন ওই এলাকায় দুঃসহ যানজট ও জলজট হবে না। প্রাথমিকভাবে বংশাল ইংলিশ রোড ও আলাউদ্দিন রোডকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নেয়া হয়েছে। পুরান ঢাকার অন্য এলাকার বাসিন্দারা এই প্রকল্প দেখে আশা করছি তারাও কমিউনিটির মাধ্যমে আমাদের জমি দেবে। তবে ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান আশরাফুল ইসলাম।
পুরান ঢাকার জমির মালিকরা একত্রিত হয়ে জমি দিলে তাদের একাধিক ভবনের মাধ্যমে বসবাসের স্থান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করে দেবে রাজউক।
এদিকে রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (২০১৬-২০৩৫) বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পিআরএ সেশন ও মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়েছে। মতবিনিময়কালে পুনঃউন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে পুরান ঢাকার সংকীর্ণ রাস্তাগুলো চওড়া করা ও খোলা জায়গা সৃষ্টি প্রভৃতি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়।
এএস/ওআর/আরআইপি