৬ মাস পর ফের অস্ত্রোপচার তৌফা ও তহুরার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৩ এএম, ০২ আগস্ট ২০১৭
ফাইল ছবি

গাইবান্ধায় কোমরে জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয়া শিশু তৌফা ও তহুরার ৬ মাস পর ফের অস্ত্রোপচার করা হবে।

বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আশরাফ উল হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, তৌফা ও তহুরা এখন সুস্থ আছে কিন্তু আশংকামুক্ত নয়। তাদের অল্প করে স্বাভাবিক খাবার দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি স্যালাইনও চলছে। সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।

আশরাফ উল হক বলেন, মেয়ে দুইটার কিছু জন্মগত সমস্যা ছিল, আমাদের আগে সেগুলো ঠিক করতে হবে। ৬ মাস পর তাদের অস্ত্রোপচার করে মলদ্বারের রাস্তা বের করা হবে।

এ বিষয়ে ঢামেক শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহনুর ইসলাম জানান, মলত্যাগের জন্য অস্থায়ী মলদ্বার তৈরি করা হয়েছে। তাদের আরও ২-৩টা অস্ত্রোপচার লাগবে। ৬ মাস পর তাদের অস্ত্রোপচার করে মলদ্বারের রাস্তাগুলো বের করা হবে। ওই অপারেশনের দুই মাস পর অস্থায়ী মলদ্বারগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। তারা আপাতত এই ধকলগুলো কাটিয়ে উঠুক।

dmc

বর্তমানে তাদের শারীরিক অবস্থা কেমন? এ বিষয়ে শাহনুর ইসলাম বলেন, তারা গতকাল অ্যানেস্থেসিয়া থেকে ভালোভাবেই ফেরত এসেছে। তারা ভালো আছে কিন্তু শঙ্কামুক্ত নয়। বর্তমানে তারা আইসিইউতে। তাদের যদি কোনো ইনফেকশন হয় তাহলে সমস্যা হয়ে যাবে। তাই আমরা তাদের রুমটাকে একেবারে ফ্রি করে দিয়েছি, একজনের বেশি ভিজিটর ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

ঢামেক পরিচালক ব্রি. জেনারেল মিজানুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত তারা ভালো আছে। তাদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইছি।

এর আগে মঙ্গলবার দুই দফায় তৌফা ও তহুরার অস্ত্রোপচার হয়। প্রথম দফায় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হওয়ার পর শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ হাসিনা শিউলি সাংবাদিকদের জানান, সকাল ৮টায় জরুরি বিভাগের তৃতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার শুরুর পর দুপুর আড়াইটায় শেষ হয়। তৌফা ও তহুরার স্পাইনাল কর্ড ও মেরুদণ্ড আলাদা করতে পেরেছি। এ পর্যন্ত যতটুকু সম্পন্ন হয়েছে, তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শিশু দুটি ভালো আছে। দুই শিশুকে আলাদা করার পর দুপুরের পর ফের অপোরেশন চলে প্রায় ৫টা পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে জোড়া লাগানো অবস্থায় দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।

কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দুটির সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই রয়েছে, তবে তাদের প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা একটি। গত বছরের অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রথমবার ঢামেক হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে তাদের পায়ুপথের রাস্তা পৃথক করা হয়। সাহিদা বেগম ও রাজু মিয়া দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলেও রয়েছে।

এআর/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।