তবুও চোখের অপারেশন চান সিদ্দিকুর

জসীম উদ্দীন
জসীম উদ্দীন জসীম উদ্দীন , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২৪ এএম, ০১ আগস্ট ২০১৭

চোখের আলো ফেরার সম্ভাবনা একেবারে না থাকলেও অপারেশন (অস্ত্রোপচার) চান সিদ্দিকুর রহমান। ভারতের চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ে বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেলে দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত তিতুমীর কলেজের এ ছাত্র।

সিদ্দিকুরের ক্ষতিগ্রস্ত দুই চোখ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক লিংগম গোপাল সোমবার দুপুরে জানান, তার চোখে আলো ফেরার কোনো আশা তারা দেখছেন না। এক ভাগ সম্ভাবনাও নেই। তবে সিদ্দিকুর চাইলে কেবল চোখে অস্ত্রোপচার করা হবে।

তবে সিদ্দিকুর চোখে অস্ত্রোপচার চান। বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্দিকুরের সহপাঠী শেখ ফরিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আল্লাহর ওপর সিদ্দিকুরের ভরসা আছে। তিনি চাইলে সে দৃষ্টি ফিরে পাবে। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখেই মঙ্গলবার হোটেল থেকে হাসপাতালে গেছে সিদ্দিকুর। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শক্রমে অস্ত্রোপচারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ২০ জুলাই সকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে নীতিমালা প্রণয়নসহ সাত দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ওই মানববন্ধনে বাধা দেয়ায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের একপর্যায়ে টিয়ারসেলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিদ্দিকুরের দুই চোখ।

siddikur2

সিদ্দিকুর রহমানকে (২৩) পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ে নেয়া হয়।

গতকাল সোমবার দুপুরে চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ে সিদ্দিকুরের দুই চোখ পরীক্ষার পর চিকিৎসক লিংগম গোপাল জানান, তার কোনো চোখেই আর আলো দেখার সম্ভাবনা নেই।

মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্দিকুরের সহপাঠী শেখ ফরিদ বলেন, “আজ সকালে সিদ্দিকুরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে জানিয়েছে, চিকিৎসক বলেছেন, ‘চোখে আলো ফেরার সম্ভাবনা নেই। তবে এটাও বলেছেন সম্ভাবনা মাত্র এক শতাংশ।’ আমি আল্লাহর ওপর ভরসা করে এই এক শতাংশেই আশা রাখতে চাই। আবারও হাসপাতালে যাচ্ছি। অপারেশন করব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করব।’

সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সিদ্দিকুর ডান চোখে আলো দেখছেন না। বাঁ চোখের একদিক থেকে আলো কিছুটা উপলব্ধি করতে পারছেন।

পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের ওই ঘটনার পরদিন রাতে ১২০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করে পুলিশ। মামলা নং- ২৬।

সিদ্দিকুরের চোখ নষ্ট হওয়ার খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অভিযোগ তদন্তে গত ২২ জুলাই রমনা বিভাগ পুলিশ পৃথক তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

জেইউ/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।