হজ এজেন্সিগুলোর ঘুম হারাম!

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৭

‘মক্কা ও মদিনাতে নির্দিষ্ট কয়েকদিনের জন্য বাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। ভিসা না হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হাজীরা সেই সব বাড়িতে পৌঁছতে পারবেন না। বিলম্বে পৌঁছলে বাড়িতে অন্য কোনো দেশের হাজীরা উঠে যাবে। বিনা নোটিশে ভিসা বাবদ হাজী প্রতি ৪৫ হাজার (দুই হাজার রিয়েল) টাকা দাবি করা হচ্ছে। এ টাকা আমরা কোথা থেকে দিবো, হাজীদের কাছে চাইলে কী দিবে। এ সব চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঠিক এভাবেই হাজীদের নিয়ে শঙ্কার কথা জানাচ্ছিলেন একাধিক হজ এজেন্সির মালিক। বিষয়টি নিয়ে খোদ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উদ্বিগ্ন।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নেতাদের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন ২০১৫ ও ২০১৬ সালে যারা হজ করেছেন তাদের ভিসা প্রতি দুই হাজার রিয়াল দাবি করা হচ্ছে। ভিসার কাগজপত্র জমা নিলেও ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের হজ চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা রয়েছে। মোট হাজীর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হাজার পাঁচেক ছাড়া বাকি সব হজযাত্রী ৬৩৫টি এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়ার কথা রয়েছে।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রোববার পর্যন্ত ২৩ হাজার ৭৬২ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। তন্মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ হাজার ৮৭৬ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০ হাজার ৮৮৬ জন গেছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৪২ সহস্রাধিক ভিসা ইস্যু হয়েছে।

হাবের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, গত দুই বছর যারা হজ করেছেন তাদের ভিসা পেতে দুই হাজার রিয়েল দিতে হবে এমন কোনো কথা হজ চুক্তিতে ছিল না। হঠাৎ করেই হজ এজেন্সিগুলো ভিসার জন্য কাগজপত্র দাখিল করে ভিসা না পেয়ে কারণ খুঁজতে গিয়ে দুই হাজার রিয়েল দেয়ার কথা জানতে পারেন। এ বিষয়টি সম্পর্কে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে। এ কারণে প্রায় ২০ হাজার হজযাত্রীর হজ গমন অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকারি হজযাত্রীদের প্রায় সবার ভিসা প্রথম ফ্লাইটের আগেই সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু কয়েকজন সরকারি হজযাত্রী বিদেশে থাকায় তাদের ভিসা গত সপ্তাহে দাখিল করতে গেলে দুই হাজার রিয়েল দাবি করে।

হজ এজেন্সি সূত্রে জানা গেছে, ই-ভিসা জনিত জটিলতার কারণে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্সের ইতোমধ্যেই ৯টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। বাতিলকৃত ফ্লাইটগুলোর অধিকাংশই ২০১৫ ও ২০১৬ সালের হজ করেছেন এমন যাত্রীর সংখ্যাই বেশি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে যারা হজ করেছেন তাদের ই-ভিসা ইস্যু করতে যাত্রী প্রতি দুই হাজার রিয়েল দাবির বিষয়টি নিয়ে মক্কায় নিযুক্ত কনস্যুল জেনারেল সৌদি হজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। খুব শিগগিরই বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে বলে তারা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এমইউ/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।