অর্থপাচার : সতর্ক করেই দায়মুক্তি দেয়া হল এবি ব্যাংককে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৬ পিএম, ৩০ জুলাই ২০১৭

অফশোর মাধ্যমে চার বিদেশি কোম্পানির নামে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের ঘটনায় আরব-বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংককে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপনা পরিষদকে সতর্ক করে প্রতিষ্ঠানটিকে দায়মুক্তি দেয়া হয়।

রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানা গেছে।

কমিটি এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিদেশে পাচারের অর্থ উদ্ধারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। পাশপাশি তদন্ত কমিটির কাজের অগ্রগতি অতিদ্রুত কমিটিকে জানাতেও নির্দেশ দিয়েছে।

সংসদীয় কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. রিজওয়ানুল হুদা স্বাক্ষরিত উপস্থাপিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপুল অর্থ পাচার হয়েছে সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। যে চার বিদেশি কোম্পানির নামে টাকা নেয়া হয়েছে সেগুলো হলো- সংযুক্ত আরব আমিরাতের গ্লোবাল এমই জেনারেল ট্রেডিং ও সেমাট সিটি জেনারেল ট্রেডিং, সিঙ্গাপুরের এটিজেড কমিউনিকেশনস পিটিই লিমিটেড ও ইউরোকারস হোল্ডিংস পিটিই লিমিটেড। এসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে ‘ব্যবসা’ এবং ‘শিল্পকারখানা’ করার জন্য এ ঋণ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ঋণের জন্য যে ধরনের বিচার বিশ্লেষণ ও নিয়ম আছে তা মানা হয়নি। এছাড়া যে উদ্দেশ্যে ঋণ নেয়া হয়েছে সে উদ্দেশ্যের ছিটেফোটাও বাস্তবায়ন হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ঋণগুলোর প্রস্তাবের যথাযথ বিচার বিশ্লেষণ না করা, ইক্যুইটির তুলনায় বেশি ঋণ মঞ্জুর, অপর্যাপ্ত জামানত, ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বের বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অনুকূলে স্থানান্তর হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে দলের নিকট প্রতীয়মান হয়।

কমিটি সূত্রে জানা গেছে, টাকার অঙ্কে দেশে ব্যাংক খাতে এর আগে আরও বড় ধরনের জালিয়াতি হলেও অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে এটাই বড় ঘটনা। অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের অভ্যন্তরে পৃথক ব্যাংকিং। বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ দেয়া ও বিদেশি উৎস থেকে আমানত সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে অফশোর ব্যাংকিংয়ে। স্থানীয় মুদ্রার পরিবর্তে বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব হয় অফশোর ব্যাংকিংয়ে। ব্যাংকের কোনো নিয়ম-নীতিমালা অফশোর ব্যাংকিংয়ে প্রয়োগ হয় না। কেবল মুনাফা ও লোকসানের হিসাব যোগ হয় ব্যাংকের মূল হিসাবে।

কমিটির সভাপতি ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. আব্দুল ওয়াদুদ, আখতার জাহান, নাজমুল হাসান, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবং মো. শওকত চৌধুরী ছাড়াও অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়াম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এইচএস/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।