যেভাবে আলোচিত এই তুষার-লাভলু
রাজধানীতে চলন্ত মাইক্রোবাসে আদিবাসী তরুণীকে গণধর্ষণের আলোচিত এ ঘটনার হোতা তুষার নামে এক যুবক। পেশায় গাড়িচালক তুষারের পুরো নাম আশরাফ খান ওরফে তুষার। গণধর্ষণের ভয়ঙ্কর এ ফাঁদের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল সে। তার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল আরো তিন যুবকের। তারাও সবাই পেশায় গাড়িচালক। পুরো পরিকল্পনায় তুষারসহ লাভলু, ফিরোজ ও খোকন অংশ নিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শুধু লাভলুকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল তুষার। দুজন মিলে ওই তরুণীকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে ধর্ষণ করে।
মঙ্গলবার রাতে এ দুই ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। একই সঙ্গে আটক করা হয়েছে পরিকল্পনায় অংশ নেয়া ফিরোজ ও খোকনকেও। কথা হয় তুষার ও লাভলুর সঙ্গে। তুষার নিজের মুখেই পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়। এ সময় তাকে ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হতে দেখা যায়নি। বরং কথা বলতে গিয়ে দু-একবার হেসেছিল সে। তবে তুষারের তুলনায় কিছুটা বিমর্ষ ছিল লাভলু।
তুষার ও লাভলু জানায়, তারা আসলে চার বন্ধু মিলে একযোগে ধর্ষণ করার পরিকল্পনা করেছিল। ঘটনাটি তুষার যখন ফিরোজকে জানায় তখন ফিরোজ তাকে ওয়াদা করিয়েছিল তাকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার। বলেছিল, সঙ্গে না নিলে তার সঙ্গে আজীবনের জন্য বন্ধুত্ব শেষ হয়ে যাবে। ধরা পড়ার পর অবশ্য ভাগ্যবান বলে জানায় ফিরোজ ও খোকন। সরাসরি ধর্ষণে অংশ নেয়া তুষার ও লাভলুর চেয়ে তাদের দায় কিছুটা কম। এমনকি সাজা থেকেও বেঁচে যেতে পারে তারা।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, আশরাফ খান ওরফে তুষারের পিতার নাম আবদুল মান্নান খান। বিবাহিত। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনার আমতলী থানাধীন চুনাখালী এলাকায়। সে ঢাকার বাড্ডা এলাকায় থাকে। চুনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর আর লেখাপড়া করেনি সে।
১৯৯৯ সালে প্রথম ঢাকায় আসে। এ সময় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ট্রলারে কাজ করে। এরপর ড্রাইভিং শিখে কিছুদিন ট্যাক্সিক্যাব চালায়। পরে পূর্বপরিচিত ফিরোজের মাধ্যমে গুলশান-১ এর সিগনেট বায়িং হাউজের চালক হিসেবে চাকরি শুরু করে। ৩-৪ বছর ধরে সে এ প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক হিসেবে কাজ করে।
অন্যদিকে জাহিদুল ইসলাম লাভলুর পিতার নাম মোবারক আলী হাওলাদার। তার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া থানাধীন তালতলা গ্রামে। সে চড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে স্থানীয় মানিক চেয়ারম্যান বাড়ির মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে।
২০০৭ সালে সে গাজীপুরের বোর্ডবাজারে একটি গার্মেন্টে চাকরি শুরু করে। তিন মাস পর গুলশান এলাকায় এক ফুফুর বাসায় এসে গাড়ি চালানো শিখে। ২০১২ সালে চট্টগ্রাম মেরিমো গার্মেন্টে চালক হিসেবে চাকরি করে। ছয় মাস পর মুন্না নামে এক চালকের মাধ্যমে রাইডার নামক একটি টাউন সার্ভিসে চাকরি নেয়।
সেখানে এক বছর চাকরির পর মজিব নামে একজনের মাধ্যমে ফিরোজের সঙ্গে পরিচয় হয়। ফিরোজের মাধ্যমে সিগনেট এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজির করিমের ব্যক্তিগত গাড়ি চালানো শুরু করে।
বিএ