সংসদ ভবনের মূল নকশা দ্রুত সংগ্রহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর


প্রকাশিত: ০২:৩১ পিএম, ২৭ মে ২০১৫

জাতীয় সংসদ ভবনের মূল নকশা দ্রুত সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ কজে কত টাকা লাগবে সেটা মূল বিষয় নয়, নকশা সংগ্রহ করতে হবে। জাতীয় সংসদ ভবনে বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সংসদ সচিবালয় কমিশনের ২৬তম বৈঠকে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে সংসদের মূল ভবনের প্রবেশমূখের নকশা প্রদর্শনীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নকশা সংগ্রহের জন্য ৪ লাখ ৫৯ হাজার ডলার ব্যয়ের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন।

আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২০৩ কোটি ৭৮ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। চলতি অর্থবছরে মোট বাজেট বরাদ্দ ছিলো ২১৯ কোটি টাকা। সেই হিসেবে জাতীয় সংসদের ব্যয় প্রায় ১৬ কোটি টাকা কমছে।

বৈঠক শেষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের জন্য উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন খাতে ২০৩ কোটি ৭৮ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকার প্রাক্কলিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অনুন্নয়ন খাতে ১৯৭ কোটি ১৩ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ৬ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ কম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্পিকার বলেন, চলতি বছরে বরাদ্দ ছিল ২১৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে সংসদের ডাটা সেন্টার নির্মানের জন্য নয় কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। যা আগামী অর্থ বছরে আর প্রয়োজন নেই। এ জন্য বরাদ্দ কিছুটা কমেছে। এছাড়া বিভিন্ন খাতে ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিগত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংসদ ভবনের মূল নকশা সংগ্রহের কাজ চলছে জানিয়ে স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী দ্রুত নকশা সংগ্রহের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। সেক্ষেত্রে ব্যয় কোন বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। কারণ এটা আমাদের একটি হেরিটেজ (ঐতিহ্য)।

তিনি আরো বলেন, সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল এসি মেরামত ও অগ্নি সতর্কতা নির্দেশনা যন্ত্র (ফায়ার এলার্মিং মেশিন) বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই খাতে বরাদ্দও রাখা হয়েছে।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে সংসদ সচিবালয়ের নিরাপত্তা শাখায় ৫টি তৃতীয় শ্রেণির পদ বিলুপ্ত করে ৫টি দ্বিতীয় শ্রেণির পদ অনুমোদন করা হয়েছে। কাজের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় সচিবালয়ের প্রশ্ন শাখায় একটি প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও একটি অফিস সহায়কের পদ এবং আউট সোর্সিং-এর মাধ্যমে ৫টি সিএনজি চালকের পদ সৃষ্টির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন। এছাড়া বিগত বৈঠকের যে সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি, তা দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, আইন-বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এছাড়া জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে যোগদান করেন।

উল্লেখ্য, সংসদ সচিবালয়ের বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারির সংখ্যা নির্ধারণ ও হ্রাস-বৃদ্ধি, পদ সৃষ্টি বা বিলোপ, নতুন নিয়োগ ও বদলি, যানবাহন এবং অন্যান্য সম্পদ বৃদ্ধিসহ জাতীয় সংসদের সার্বিক উন্নয়নে পরামর্শমূলক দায়িত্ব পালন করে সংসদ কমিশন। ১৯৯৪ সালে পাসকৃত জাতীয় সংসদ সচিবালয় কমিশন আইন অনুসারে ৫ সদস্যের এই কমিশনের সভাপতি জাতীয় সংসদের স্পিকার। আর সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী এই কমিটির সদস্য।

এছাড়া আলোচনার সুবিধার্থে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপকে বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়। সংসদ কমিশন গঠনের পর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে বছরের বিভিন্ন সময়ে কমিশনের বৈঠক হলেও সাধারণত বাজেটকে সামনে রেখেই এই বৈঠক ডাকা হয়। সর্বশেষ গত বছর ১ জুন সংসদ কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এইচএস/আরএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।