সাইবার হামলা প্রতিরোধে টাস্কফোর্স গঠন
বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান সাইবার হামলা প্রতিরোধে নতুন টাস্কফোর্স গঠন করছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইউরোপোল। নতুন এ টাস্কফোর্সের নাম দেয়া হয়েছে জয়েন্ট সাইবার ক্রাইম অ্যাকশন টাস্কফোর্স (জে-ক্যাট)। খবর গার্ডিয়ান
অনলাইনের স্মার্ট অপরাধীদের ধরতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অনলাইন খাতে বিশেষজ্ঞ পুলিশ সদস্যদের এ টাস্কফোর্সের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এমন খাত কমই আছে, যা এখন পর্যন্ত সাইবার হামলা হয়নি। বেশকিছু প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোই সাইবার হামলায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ ধরনের হামলা প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশ চেষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন দেশের সরকারি সাইটগুলোও এ হামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। ফলে বিভিন্ন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন টাস্কফোর্স গঠন করছে ইউরোপোল।
নতুন টাস্কফোর্সটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি ও ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অ্যান্ডি আর্কিবাল্ডকে। আপাতত এ টাস্কফোর্স ছয় মাসের একটি প্রকল্প হাতে নেবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়। আর এ প্রকল্পে ইউরোপের বাইরে থেকে সাহায্য করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ অভিজ্ঞ ও দক্ষ পুলিশ সদস্য দিয়ে টাস্কফোর্সটিকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। অস্ট্রিয়া, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও যুক্তরাজ্য আপাতত এ টাস্কফোর্স গঠনে একসঙ্গে কাজ করবে।
এ টাস্কফোর্সের প্রধান কাজ হবে সাইবার হামলার ঘটনা কমিয়ে আনা। এজন্য প্রয়োজন হবে সাইবার অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করা। এছাড়া তাৎক্ষণিক যে কোনো হামলা প্রতিরোধেও টাস্কফোর্সটি সহায়তা করবে। এদিকে সাইবার হামলার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী বেশকিছু আন্ডারগ্রাউন্ড মার্কেট গড়ে উঠেছে। এ বাজারগুলোয় সাইবার হামলার জন্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ বিক্রি হয়। এছাড়া সাইবার হামলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিক্রির জন্যও গড়ে উঠেছে বিশাল নেটওয়ার্ক। এ নেটওয়ার্কগুলো ভাঙতে না পারলে সাইবার হামলা কমানো সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। এ নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই হাতিয়ে নেয়া তথ্য অহরহ বিক্রি করছে সাইবার অপরাধীরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করতে সংশ্লিষ্ট সাইটগুলোয় হামলা চালাতে অর্থ প্রদান করে। এছাড়া বাজারের অবস্থা বুঝতে অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহক তথ্যের প্রয়োজন হয়। এসব ক্ষেত্রে হ্যাকারদের কাছে থাকা গ্রাহক তথ্য অনেক বেশি দামি হয়ে উঠে। এ তথ্যগুলোই হ্যাকাররা উচ্চমূল্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে। সহজে এসব তথ্য সংগ্রহ করা যায় বলে এর চুরির প্রবণতাও দিন দিন বাড়ছে।
এসব প্রবণতা কমিয়ে আনার পাশাপাশি সাইবার অপরাধীদের কর্মতত্পরতা কমিয়ে আনতেই নতুন টাস্কফোর্সটি গঠন করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়।