যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার কাছেই প্রতিবেদন!


প্রকাশিত: ১২:৪৮ পিএম, ২৪ মে ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশিদের দেয়া সম্মাননা ক্রেস্টে সোনা কম দেয়ার ঘটনায় সংসদীয় উপ-কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছেই জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা না করে বৈঠক শেষ করেই প্রতিবেদন নিয়ে চলে যান তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে।

রোববার সকালে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এবিএম তাজুল ইসলাম সংসদীয় উপ-কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে চলে যান। তার নির্দেশেই মাত্র একটি কপি তৈরি করা হয়েছিল। এই ক্যাপ্টেন (অব.) এবিএম তাজুল ইসলাম বিগত মহাজোট সরকারের সময়কার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তাই এ ঘটনার সঙ্গে তারও সম্পৃক্ততা আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তাকেই আবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি করায় এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে কী-না তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছিল।  

ক্রেস্টে সোনা কম দেয়ার নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর গত বছরের ২৪ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তা তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আফসারুল আমিনকে আহ্ববায়ক করে গঠিত এই উপ-কমিটিতে ইকবালুর রহিম ছাড়াও সদস্য রয়েছেন গাজী গোলাম দস্তগীর।

‘ক্রেস্টের স্বর্ণের ১২ আনাই মিছে!’ শিরোনামে গত বছরের ৬ এপ্রিল একটি পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তদন্ত কমিটি, অধিকতর তদন্ত কমিটি, সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ নিয়ে থানায় মামলা এবং হাইকোর্টে রিটও হয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে তদন্ত করেছে। এতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক সচিব মিজানুর রহমান ও বর্তমান সচিব কেএইচ মাসুদ সিদ্দিকসহ ১৩ কর্মকর্তা ও সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। কিন্তু সংসদীয় তদন্ত কমিটিতে অবৈধ প্রভাব খাটিয়েছেন তাজুল ইসলাম।

এখন তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে যাওয়া সম্পর্কে গাজী গোলাম দস্তগীর রোববার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিভিন্ন বাধা উপেক্ষা করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। সভাপতির কাছেই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া বিব্রতকর। কিন্তু নিয়ম তো মানতে হবে। তবে সভাপতি যে প্রতিবেদন বাসায় নিয়ে যাবেন এটা ভাবিনি আমরা।

এ বিষয়ে আগামী বৈঠকে আলোচনা হবে বলেও জানান তিনি।

বৈঠকে উপস্থিত এক সদস্য জানান, তদন্তে সভাপতির সংশ্লিষ্টতা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া বিষয়টি এখন বিচারাধীন। এর সঙ্গে জড়িত অনেকের চাকরিও চলে গেছে। তাই এই উপ-কমিটির তদন্তের আর কোনো তেমন মূল্য নেই।

বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, ইকবালুর রহিম, গোলাম দস্তগীর গাজী, আশেক উল্লাহ রফিক এবং স্বপন ভট্টাচার্য্য বৈঠকে অংশ নেন।

এইচএস/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।