ঢাকায় টার্কিস হোপ স্কুলে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৯ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৭

ঢাকায় টার্কিস হোপ স্কুলে জঙ্গি সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকাস্থ তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওজতুর্ক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে দূতাবাস থেকে অবহিতও করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তুরস্ক দূতাবাস। গুলশানের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তুরস্কের ফেতুল্লাহ গুলেনের সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিছু বাংলাদেশি কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তুরস্ক অবহিত করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি এই সংগঠনের তৎপরতা রুখে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত তুর্কি ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের আদর্শে প্রভাবিত সংগঠন ফেতুল্লাহ গুলেন সন্ত্রাসী সংগঠনের (এফইটিও) সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু লোকও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে টার্কিশ হোপ স্কুলের বেশ কয়েকজন তুরস্কের নাগরিক এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত। এছাড়াও বাংলাদেশ-তুরস্ক  চেম্বার অব কমার্সেরও প্রথম প্রশাসন জঙ্গি কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। বাংলাদেশ-তুরস্ক চেম্বার অব কমার্স তুরস্ক সরকার দ্বারা কোনো অনুমোদিত সংগঠন নয়। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত তুরস্ক।

রাষ্ট্রদূত বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তুরস্ক শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতিকে সমর্থন করে। তবে আমরা টার্কিশ হোপ স্কুল বন্ধের পক্ষে নই। কারণ এখানে অন্তত দুই হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। কিন্তু স্কুলের কর্মকর্তা পর্যায়ের অনেকেই এফইটিওর নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন বলে আমরা জানি। ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর অনেকেই এদেশ থেকে চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ রয়ে গেছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গিদের নাম ইতোমধ্যে সরকারকে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তুরস্ক ফলাফলের অপেক্ষা করছে।

তিনি আরও বলেন, গুলেনের আদর্শে প্রভাবিত সন্ত্রাসীরা তুরস্ক, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৫০টি দেশে সক্রিয়। তারা তুরস্কের নাম নিয়ে এ দেশে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলেছে, যার কোনো অনুমোদন তুরস্ক দেয়নি। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা খুবই প্রভাবশালী হয়েছে। তাই সরকারের বিভিন্ন মাধ্যমে সহজেই যাতায়াত করতে পারে। তাদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। কারণ তুরস্কে যা ঘটেছে তা বাংলাদেশে কাম্য নয়।

তুরস্ক থেকে ইউরোপে পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে আটকে পড়েছেন প্রায় দু’হাজার বাংলাদেশি। এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাইলে, তিনি এ বিষয়ে অবহিত নন বলেন জানান। বাংলাদেশ সরকার থেকে তুরস্ক দূতাবাসে কোনো প্রকার যোগাযোগ করা হয়নি। তবে অভিবাসী প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তিন থেকে চার বছর আগে একটি খসড়া প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে আবারও ২০১৫ সালে এ বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ বিষয়ে চুড়ান্ত পর্যায়ে এখনও পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ-তুরস্ক।

তিনি বলেন, শিগগিরই বাংলাদেশ ও তুরস্কের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক বা এফওসি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। বৈঠকে জঙ্গিবাদ রোধ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিতে আগ্রহী তুরস্ক। এ নিয়ে গত বছর বাংলাদেশকে একটি খসড়া প্রস্তাবও করেছে তুরস্ক। এফওসিতে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।

মধ্যপ্রাচ্যে কাতার ও সৌদি দ্বন্দ্বে তুরস্কের অবস্থানের জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাতার একটি স্বাধীন দেশ। দেশটি কীভাবে চলবে তা তারাই ঠিক করবে। তবে কাতার এ বিষয়ে সহযোহিতা চাইলে তুরস্ক এতে আগ্রহী।

জেপি/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।