কুড়িগ্রামে কমছে বন্যার পানি, ভাঙছে ব্রহ্মপুত্র
বন্যার পানি কমতে না কমতেই কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুরে দেখা দিয়েছে ব্রহ্মপুত্রের ভয়াবহ ভাঙ্গন। গত শুক্রবার থেকে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে নদে ওই ভয়াবহ ভাঙ্গনের শুরু হয়। রৌমারী উপজেলায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুরে ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে গত ৩দিনে খেদাইমারী, বলদমারা, ঘুঘুমারী ও খেড়ুয়া এলাকার ৪শ’ পরিবারের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।
খেদাইমারী গ্রাম বিলীণ হওয়ার পর ব্রহ্মপুত্রের থাবায় খেদাইমারী হাটবাজার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে খেদাইমারী প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়। ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে মানুষজন ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। ভিটে-মাটি হারিয়ে নিঃস্ব পরিবারগুলো চোখে অন্ধকার দেখছেন। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে নিজস্ব উদ্যোগে বাঁশ-বাঁশের চাটাই দিয়ে স্রোতের গতিবেগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য বিরামহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচেছ নদী পাড়ের সাধারণ মানুষ। তবুও ভাঙছে নদ। একের পর এক জমি বাড়িঘর গিলে খাচেছ ব্রহ্মপুত্র।
খেদাইমারী এলাকার বেসরকারি সংস্থা সিএসডিএ’র পরিচালক আবু হানিফ বলেন, সাতদিন আগে আমি ঢাকায় গেছি। ফিরা আইসা দেহি সব ওলটপালট হইয়া গ্যাছে। নিজের গ্রামটিও খুঁইজা পাই না। এটা কিবা নদী ভাঙনরে বাবা!
সংশ্লিষ্ট এলাকার মেম্বার আব্দুর রহিম জানান, নদী ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি হারা প্রায় ৪শতাধিক মানুষ এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি আর খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, ভাঙ্গনে এরই মধ্যে খেদাইমারী হাটবাজার ও চারশ’ পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। বিষয়টি কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুড়িগ্রাম অফিসকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে। সঙ্গে জরুরীভাবে অস্থায়ী ভিত্তিতে হলেও ভাঙন প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানানো হয়।
পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের বলেন, ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। আমাদের প্রকৌশলীরা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা ঘুরে আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।