ইউনিপে টু ইউ`র টাকা ফেরত পেতে সংসদীয় কমিটিতে চিঠি
মাল্টি লেবেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ইউনিপে টু ইউ’র থেকে টাকা ফেরত পেতে সংসদীয় কমিটিতে চিঠি দেয়া হয়েছে।
সরকারের নির্দেশ সত্ত্বেও প্রতারিত ২০ লাখ গ্রাহক এখনও তাদের টাকা ফেরত পাননি। বরং আবারও প্রতারণা শুরু করেছেন কোম্পানির কর্মকর্তারা। গ্রাহকরা এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রতারিত গ্রাহকদের পক্ষে কক্সবাজার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল করিম সংসদীয় কমিটির সভাপতি বরাবর লিখিত আবেদনে জানিয়েছেন, ভিটেবাড়ি বিক্রি করে গ্রাহকরা ইউনিপে টু ইউ’তে বিনিয়োগ করেন। তাদের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ওই গ্রাহকদের পাওনা টাকা আদায় না হলেও সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তা মুন্সি তরিকুল ইসলাম ও তার সঙ্গীরা নতুন করে প্রতারণা শুরু করেছেন।
আবেদনে প্রতারক চক্রের নতুন তৎপরতা বন্ধ ও নিঃস্ব গ্রাহকদের বিনিয়োগের অর্থ দ্রুত ফেরত পেতে সংসদীয় কমিটির হস্তক্ষেপও কামনা করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ইউনিপে টু ইউ’র কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্থানে এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ২০১১ সালে সরকার সংস্থাটির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে ১২৯ কোটি টাকা উদ্ধার করলেও অবশিষ্ট অর্থ আত্মসাৎ করে কর্মকর্তারা বিদেশে পাড়ি জমায়। কেউ কেউ দেশে আত্মগোপনে থাকে।
আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুন্সি তরিকুল ইসলাম অন্যতম। যিনি আত্মসাৎ করা টাকায় বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে ফ্ল্যাট, জমি, দোকানসহ বিভিন্ন সম্পত্তি কিনেছেন। আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বিপুল অংকের অর্থ জমাও রেখেছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট প্রতারিত গ্রাহকদের পক্ষে কক্সবাজার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বৈদ্য ঘোনার আব্দুর রশিদ কক্সবাজার আমলী আদালতে ১০০কোটি টাকা আত্মসাতের একটি মামলা করেন। যার নং- সিআর - ৫৯২/১২ । ধারা- ৪০৬/৪২০/৩৪ দ.বি.। মামলায় মুন্সি তরিকুল ইসলামসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর কিছুদিন প্রশাসন সক্রিয় থাকলেও পরে নিশ্চুপ হয়ে যায়। সম্প্রতি তরিকুল ও তার সঙ্গীরা নতুন করে প্রতারণা শুরু করেছে। অর্থ আত্মসাতের এক মামলায় চট্টগ্রামের একটি আদালতে কোম্পানির দুই পরিচালকের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হওয়ার পর তারা নানা কৌশলে অন্য মামলাগুলোর কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এমএলএম কোম্পানির ব্যবসার নামে প্রতারণা বন্ধে আগেই সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রীও এ ধরনের প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক রয়েছেন। যারা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
এইচএস/জেএইচ/এমএস