ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন ইভান


প্রকাশিত: ০৬:১১ এএম, ০৭ জুলাই ২০১৭

রাজধানীর বনানীতে জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে বাসায় ডেকে ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বাহাউদ্দিন ইভান।শুক্রবার সকালে রাজধানীর র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইভান ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ইভানকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ইভান প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছেন। এছাড়া আরো কয়েকটি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। ৫ তারিখ দুপুরে বনানী থানায় মামলা হলেও তরুণী থানায় অভিযোগ করেন সকালে। অভিযোগের পর পরই ইভানের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। তখন তিনি বাসার ছাদে লুকিয়ে ছিলেন। পুলিশ চলে যাওয়ার পরপরই বাসা থেকে বের হয়ে দক্ষিণখানে এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যায় ইভান।

তিনি বলেন, ধর্ষণ মামলা দায়েরের পর পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও ইভানকে গ্রেফতারে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করে। পরিবারের কাছ থেকে তাদের আত্মীয় স্বজনদের তথ্য সংগ্রহ করে সেসব এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নারায়নগঞ্জে তার এক আত্মীয়র বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ইভান ক্যাম্ব্রিয়ান কলেজে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে বাবার ব্যবসা দেখাশুনা করতেন। ২০০৫ সাল থেকে তিনি বিভিন্ন মাদকে আসক্ত। দুইবার তাকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল। তার বিভিন্ন অপকর্মের কারণে ২০০৮ সালে তার বিয়ে দেন পরিবার এবং তার পাঁচ বছর ও দেড় বছর বয়সী দুই সন্তান রয়েছে। ইভানের সঙ্গে মামলার বাদী ওই তরুণীর অনেকদিন আগে পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক ছিল বলে জানায় ইভান।

পরদিন সকালে সিলেট অথবা কুমিল্লা যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও নারায়নগঞ্জের খালার বাসায় যান ইভান। বিকেলে সেই বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলাটি যেহেতু বনানী থানা তদন্ত করছে সেহেতু আসামিকে বনানী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান মুফতি মাহমুদ।

উল্লেখ্য, জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে বনানীতে বাসায় ডেকে গত মঙ্গলবার রাতে ইভান এক তরণী ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠ। পরে ওই তরুণী ধর্ষণের অভিযোগে ইভানের বিরুদ্ধে বুধবার বনানী থানায় মামলা করেন।

অভিযোগকারী তরুণী পুলিশকে জানান, সেই রাতে বাসায় গিয়ে তিনি কোনো ধরনের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আলামত দেখতে পাননি। ভয়ে বাড়ি ফিরতে চাইলে ইভান তাকে বাড়ি ফিরতে দেননি। তারপর তারা রাতের খাবার খান এবং ইভান তাকে জোর করে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ান। নেশাজাতীয় দ্রব্য খেতে অস্বীকৃতি জানালে ইভান তাকে বলে, একদিন খেলে কিছু হবে না। এরপর রাত দেড়টার দিকে ইভান ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের দাওয়াতে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ, শাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে আবদুল হালিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সব আসামি বর্তমানে কারাগারে আছেন।

এআর/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।