নির্বাচনে চাপ আসলে আইন প্রয়োগ করব
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আশা করি কোনো ধরনের চাপ আসবে না। আর চাপ আসলেও যেটুকু আমাদের প্রয়োগ করার ক্ষেত্র আছে সেটুকু প্রয়োগ করব। এ বিষয়ে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো চাপ আমরা পাইনি। নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা প্রদানে সরকারের যে দায়িত্ব এখন পর্যন্ত আমরা বুঝতে পারছি সেটা আমরা পাব।
তিনি বলেন, ২৫ জুলাই ময়মনসিংহ থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হবে। বিগত ভোটার তালিকা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে, হয়তোবা কিছু বাদ পড়েছে, কিছু বাকি রয়ে গেছে কিংবা নারী ভোটারের সংখ্যা কিছুটা কম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মৃত ভোটার যারা আছে তাদের তালিকা থেকে হয়তো বাদ দেয়া হয়নি। এ ধরনের সমস্যা আমরা জানতে পারছি। সুতরাং আমরা একটা নির্ভুল ভোটার তালিকা আগামী নির্বাচনের আগে দিতে চাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনের মধ্যেই আছে তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন। তাই কারও মধ্যে কোনো ধরনের প্রশ্ন যেন না থাকে সেজন্য তথ্য সংগ্রহকারীদের সবাইকে বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করব। তিনি বলেন, কোনো দলীয় কার্যালয়ে নয়, বরং বাড়ি বাড়ি গিয়েই ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছি। দলীয় কার্যালয়ে ভোটার করা হলে সেটি হবে দণ্ডনীয় অপরাধ।
রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে ও নারী ভোটারদের সংখ্যা বাড়াতে কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ভোটার তালিকার শিডিউল অনুযায়ী কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা এবং বিভাগসহ সব জায়গায় আমাদের কমিটি করে দেয়া আছে। বিশেষ অঞ্চলগুলোর জন্যও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কমিটি করে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের বিষয়টা নতুন করে উঠছে, তারা অনেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। তাই এ ব্যাপারে খুব কেয়ারফুল (যত্নবান) যাতে তারা কোনোভাবেই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে। কারণ ভোটার হলেই তারা জাতীয় পরিচয়পত্র পাবে। সেই ভোটারের সুবাদে তারা আবার পাসপোর্ট পাবে। বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধায় বিশেষ অঞ্চলগুলোতে কমিটি করে দেয়া হয়েছে।
নারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, নারীদের ভোটার হওয়ার জন্য প্রচার বাড়াচ্ছি। এজন্য মসজিদ মন্দিরে প্রচারণা চালানো হবে। তাদের স্বামীরাও যাতে উৎসাহ দেয় সেই ব্যবস্থাও করা হবে। কারণ কেউ ভোটার না হলে জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন না। আর জাতীয় পরিচয়পত্র না পেলে এ সম্পর্কিত সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজটা খুবই টেকনিক্যাল বিষয়। আইনি কাঠামোর মধ্যেই আমাদের যেতে হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের উদ্দেশ্য হলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাদের কি বক্তব্য তা জানা। তাদের কাছ থেকে আমরা শুনব, জানব। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কি করতে পারি সেটা চিন্তা করব।
তিনি বলেন, আমরা যদি আমাদের কাজটা সুষ্ঠুভাবে করতে পারি তাহলে আমার বিশ্বাস ভোটাররা আস্থা ফিরে পাবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস তাদের আস্থা থাকবে। আসন্ন নির্বাচনে সবাই অংশ নেবেন বলেও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন এ নির্বাচন কমিশনার।
এইচএস/ওআর/এমএস