উচ্চ শিক্ষার উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় বক্তারা মানব সম্পদকে জাতীয় উন্নয়নের মূল উপাদান হিসেবে অভিহিত করে উচ্চ শিক্ষার উন্নয়নে পরিকল্পিত ও কার্যকর বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘উচ্চ শিক্ষা বাজেট বিশ্লেষণ, পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, উচ্চ শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তিনি বাজেট ব্যয়ের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি ও অর্থের অপচয় রোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষা এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে উন্নতির প্রভাব দেশের অন্য সকল ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। আমরা বস্তুগত সম্পদের ক্ষেত্রে যতই প্রবৃদ্ধি অর্জন করিনা কেন, মেধা সম্পদের সমৃদ্ধি ঘটাতে না পারলে বস্তুগত উন্নয়নের ফলাফল দীর্ঘমেয়াদে সার্থকভাবে প্রতিফলিত হবে না।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা খাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বাজেট বরাদ্দ চাহিদা’র প্রাধিকার অনুযায়ী প্রয়োজনীয় হারে বৃদ্ধি করবে।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান মানব সম্পদকে জাতীয় উন্নয়নের মূল উপাদান হিসেবে অভিহিত করে উচ্চ শিক্ষার উন্নয়নে পরিকল্পিত ও কার্যকর বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মঞ্জুরি কশিমন পূর্ব নির্ধারিত বাজেটের সীমাবদ্ধ থেকে চলতে হয় যা বৃদ্ধি না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবিক উন্নয়ন কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো দুষ্কর। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বাড়াতে ছাত্রদের টিউশন ফি বৃদ্ধি কোন সমাধান নয়। মানব সম্পদ উন্নয়নে শিক্ষা খাতে এবং বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে সরকারকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কর আদায়ে দক্ষতা বাড়িয়ে জাতীয় আয় বৃদ্ধি করতে হবে এবং তা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ছাত্র-শিক্ষা কল্যাণে, শিক্ষকদের মানসম্পন্ন জীবনযাপনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বেতন-ভাতা প্রদানে এবং গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণে ব্যয় আরো বাড়াতে হবে।
বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ তার সম্পূরক আলোচনায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে, বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনামূলক ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে হবে, অংশগ্রহণমূলক বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে, আর বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে কর দাতার সংখ্যা, করের আওতা বৃদ্ধি, কর আদায়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। ফি কাঠামো সমতা নয় নায্যতার ভিত্তিতে পুনর্গঠন করা, শিক্ষকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন, জেন্ডার ডাইমেনশনের প্রতি যত্নবান হওয়ার প্রস্তাবনার সাথে তিনি গবেষকদের সাথে একমত প্রকাশ করেন।
আরএস/আরআই