কোটি মানুষের ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা


প্রকাশিত: ০৭:১৭ এএম, ২৪ জুন ২০১৭

কোটি মানুষের পদচারণায় মুখরিত ও যানজটের চিরায়িত রূপের ঢাকা এখন ফাঁকা। কোথাও কোলাহল বা দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যাম নেই। রাজধানীর মানুষের অন্যতম প্রধান পরিবহন বাস ও রিকশা অাধিক্য নেই বললেই চলে। বাস, মিনিবাস, কাউন্টার সার্ভিস, হিউম্যান হলারসহ অন্যান্য বাস সার্ভিস চলছে নামে মাত্র। যানবাহন শূন্য অনেক রাস্তায় স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা ফুটবল-ক্রিকেট খেলছে।

শনিবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পুরো রাজধানীতেই এমন চিত্র দেখা গেছে। ঢাকার ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের চিত্র ছিল চোখে পড়ার মতো। সন্ধ্যার পরও মতিঝিলের যেসব রাস্তা থাকে বাস-রিকশা আর হকারদের দখলে। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত সেখানে একেবারেই ভিন্ন চিত্র। যানবাহনের সঙ্গে কমে গেছে হকারের সংখ্যাও।

Dhaka

মতিঝিলে জনতা ব্যাংক টাওয়ারের পাশে ফুটপাতে টি-শার্ট বিক্রি করছিলেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার লোকমান গাজি। জিজ্ঞাসা করা মাত্রই জবাব, ‘হুদাই দোয়ান (দোকান) লাগাইছি। বেচাকিনা নাই। হাঞ্জে (সন্ধ্যায়) বাইত (বাড়িতে) চলি যামু।’

গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার হিড়িক পড়ে গেছে ঘরমুখো মানুষদের। এ জনস্রোত অব্যাহত থাকবে আগামীকাল রোববার দিনগত রাত পর্যন্ত। অবশ্য আজ (শনিবার) দিনগত রাতের মধ্যেই রাজধানী ঢাকা প্রায় ফাঁকা হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, গত বৃহস্পতিবার অফিস-আদালত ছুটি হওয়ার পর থেকে ক্রমেই ফাঁকা হতে শুরু করেছে মহানগরী। পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। ধারণা করা হচ্ছিল, শুক্রবারের পর আর তেমন যানজট থাকবে না। কিন্তু রাস্তাঘাটে উন্নয়ন কাজের জন্য বেহাল অবস্থার কারণে আজও (শনিবার) বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে ঘরমুখো মানুষ। যানজট তেমন না থাকলেও গাড়ি চলছে ধীর গতিতে।

Dhaka

আপনজনদের নিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে নাড়ির টানে আজও (শনিবার) রেল, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে নেমেছে ঘরমুখো মানুষের ঢল। রাজধানীর কমলাপুর এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশন ঘরমুখো মানুষের ঢল দেখা গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেককেই উঠেছেন ট্রেনের ছাদে। এ ছাড়া প্রতিটি ট্রেনই ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, মানুষের বাড়তি চাপের কারণে ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে।

জাগো নিউজের প্রতিনিধিরা জানান, রাজধানী ফাঁকা হলেও গতকাল শুক্রবার ভোর থেকেই ঢাকা-চট্রগ্রাম রুটের কাঁচপুর থেকে মেঘনা ব্রিজের ওপার পর্যন্ত ছিল দীর্ঘ যানজট। আজ সকাল থেকেও গাড়ি চলছে পিপড়া গতিতে। গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজট রয়েছে। এ ছাড়া মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌ-রুটের উভয়পাড়ে ৫ শতাধিক যানবাহন যানজটের গ্যাঁড়াকলে আটকা পড়েছে।

এদিকে ঈদে যাত্রীদের ঘরেফেরা উপলক্ষে বাস-ট্রেন ও লঞ্চঘাটে নিরাপত্তার দায়িত্বে র্যাব-পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত রাজধানীর কোথাও কোনো অপ্রতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।

আরএম/আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।