রথযাত্রায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে পুলিশ


প্রকাশিত: ১০:১৮ এএম, ১৯ জুন ২০১৭

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রায় পুলিশ সর্বোচ্চ ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।

আগামী ২৫ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত নয় দিনব্যাপী হিন্দুদের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রথযাত্রা উপলক্ষে ‘আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা’ সংক্রান্ত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে বিরাজমান ধর্মীয় সম্প্রীতি হাজার বছরের ঐতিহ্য।

তিনি বাংলাদেশ পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে রথযাত্রা উৎসবকে শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

আইজিপি বলেন, প্রতিটি মন্দিরে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের মাধ্যমে পর‌্যাপ্ত নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপত্তা সচেতন হতে হবে। নিজেদের মধ্যে নিরাপত্তা বোধ জাগিয়ে তুলতে হবে।

সভায় সঠিক সময়ে রথযাত্রা শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রথযাত্রায় আয়োজকদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন, যাত্রাপথে বিভিন্ন মোড়, জংশন, ফুটওভার ব্রিজে পর‌্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন, রথযাত্রা মিছিলের সামনে-পেছনে ও উভয় পাশে, যাত্রাপথে, রুফটপে পর‌্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন, সিসিটিভি স্থাপন, হকার ও সন্দেহভাজন লোকদের প্রবেশ না করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় বলা হয়, রথযাত্রায় ব্যাগ, পোটলাসহ প্রবেশ করতে না দেওয়া, বিক্ষিপ্তভাবে অলি-গলি থেকে আগত লোকদের যোগদান করতে না দেওয়া, ইউনিফর্ম পুলিশ ও সাদা পোশাকে ফোর্স মোতায়েন করা, কমিউনিটি পুলিশ নিয়োগ, রথযাত্রার প্রবেশস্থল ও আশেপাশে তল্লাশি চৌকি স্থাপন, মোটরসাইকেল ও সন্দেহভাজন গাড়ি তল্লাশি করা, নারীদের নারী স্বেচ্ছাসেবক ও নারী পুলিশ দ্বারা তল্লাশির ব্যবস্থা করা হবে।

এছাড়া বিদেশি নাগরিকদের রথযাত্রায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ, রথযাত্রা পথে মাইক ব্যবহার না করা এবং রথ থেকে ফল ও খাদ্য ছুঁড়ে না ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ, সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, কোষাধ্যক্ষ জ্যোতিশ্বর গৌরদাস ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায়, স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক ইসকন মাধব মুরারী দাস, কালী মন্দিরের সভাপতি রবিন দাশ উপস্থিত ছিলেন।

হিন্দু নেতারা রথযাত্রা উপলক্ষে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, হিন্দুদের সব ধর্মীয় উৎসব পালনকালে পুলিশ যে পর‌্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় তা প্রশংসনীয়।

প্রধান রথযাত্রা আগামী ২৫ জুন দুপুর ২টায় রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন মন্দির থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। উল্টো রথযাত্রা আগামী ৩ জুলাই দুপুর আড়াইটায় ঢাকেশ্বরী মন্দির হতে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে এসে শেষ হবে।

এছাড়া ধামরাই, গাজীপুর, সিলেট, নওগাঁ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, মৌলভীবাজার, মানিকগঞ্জ ও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোহা. শফিকুল ইসলাম, ডিআইজি (অপারেশনস্) ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান, ডিআইজি (প্রশাসন) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সিটি এসবির মল্লিক ফখরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার, সিটিটিসির প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জেইউ/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।