অর্থমন্ত্রী নির্বাচনবিরোধী বাজেট দিয়েছেন : সংসদে হানিফ


প্রকাশিত: ০৮:২২ এএম, ১৯ জুন ২০১৭
ফাইল ছবি

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, এবারের বাজেটটাই আমাদের নির্বাচনী বাজেট হওয়া উচিত ছিল। আমি জানি না, অর্থমন্ত্রী কি কারণে, কার পরামর্শে এটাকে নির্বাচনী বাজেট না করে বরং বলা যায় নির্বাচনবিরোধী বাজেটে পরিণত করেছেন।

সোমবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। হানিফ বলেন, বাজেট পেশ করার পর তা দেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তুলেছে। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, এ বাজেট নির্বাচনী বাজেট নয়। তাহলে নির্বাচনী বাজেট কবে দেবেন আপনি? আগামী বছর যখন পেশ হবে তখন জুলাই মাস শুরু হয়ে যাবে। এরপর নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা। তাই সেই বাজেট আমাদের নির্বাচনে কোনো সহায়ক ভূমিকায় আসবে না।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী ব্যাংকে জমা রাখা টাকার ওপর আবগারি শুল্ক ধার্য করেছেন কী কারণে, কার স্বার্থে, কার পরামর্শে এটা আমার বোধগম্য নয়। এ আবগারি শুল্ক ধার্য করে কত টাকা রেভিনিউ করেছেন? এ আবগারি শুল্কের কারণে মাত্র ৪শ কোটি টাকা বৃদ্ধি হচ্ছে। অথচ হলমার্কের ঘটনার পর অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন তিন চার হাজার কোটি টাকা এমন কোনো টাকা না। তাই যদি হয় তাহলে কেন এই ৪শ কোটি টাকার জন্য সারাদেশের মানুষের মধ্যে আক্ষেপ ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন? এটা কার স্বার্থে করা হয়েছে সেটা আমরা জানি না। আমি মনে করি অর্থমন্ত্রীর উচিত হবে এটি বাতিল করা।

তিনি বলেন, এবার গণহারে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। পৃথিবীর কোনো ইতিহাসে একটি খাত থেকে এক বছরের ব্যবধানে ৩০ শতাংশ আয়কর বা রেভিনিউ বৃদ্ধি করা যায় না। তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম বেসিক ব্যাংকের মূলধনের ঘাটতির জন্য ১ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। আমার জিজ্ঞাসা কার টাকা আপনি দিচ্ছেন, কেন দিচ্ছেন, জাতি এটা জানতে চায়। অযোগ্যতা, দুর্নীতির কারণে তারা ব্যাংকের মূলধন লুটপাট করেছেন আর তার টাকা আমাকে দিতে হবে? আমরা এই টাকা দিতে চাই না।

তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে যেসব ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হোক। এদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হোক। সরকারের টাকা এভাবে লুটপাট করতে দেয়া যায় না। তিনি বলেন, আমরা বলি স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে চাই। কিন্তু চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বেতনের কথা শুনলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান সরকারের তরফ থেকে বেতন পান মাত্র সাড়ে ১৭শ টাকা এবং লোকাল রেভিনিউ থেকে প্রাপ্ত যোগ করে সবমিলিয়ে বেতন পান সাড়ে তিন হাজার থেকে তিন হাজার সাতশ টাকা। একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান যে কিনা প্রায় ২০ হাজার লোকের প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের বেতন এত কম। অথচ গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩শ’ টাকা। সেখানে একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বেতন কী করে সাড়ে ১৭শ টাকা হতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদের একজন মেম্বারের বেতন মাত্র ১১শ টাকা আর স্থানীয় রেভিনিউ থেকে পান আরও ১১শ টাকা। এটি একেবারে অগ্রহণযোগ্য।

এই সময় স্থানীয় সরকারের কাছে তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর অনুরোধ করেন তিনি। তিনি চেয়ারম্যানের বেতন ১৫ হাজার ও মেম্বারদের ১০ হাজার টাকা করার দাবি জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এই বেতন বাড়ালে সরকারের মাত্র ৭০ কোটি টাকার মত বেশি ব্যয় হতে পারে যেটা আমাদের অর্থমন্ত্রীর কাছে কিছুই না।

এসএইচ/ওআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।