ইস্টার্নপ্লাজায় জমেছে ঈদ কেনাকাটা


প্রকাশিত: ০৩:১৫ পিএম, ১৬ জুন ২০১৭

জমে উঠেছে ঢাকার পোশাক বাজার ও ফ্যাশন হাউসগুলো। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে মার্কেটগুলোতে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ প্রতিদিনই ঈদের কেনাকেটায় ব্যস্ত সময় পার করছে নগরবাসী। ইস্টার্নপ্লাজায় বাহারি রকমের কালেকশন রয়েছে দোকানিদের হাতে। ইস্টার্নপ্লাজার বিভিন্ন বিপণী বিতান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

পরিবার, বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে বাজারে এসেছেন অনেকে, ঘুরে ঘুরে পছন্দের পোশাক বাছাই এবং দরদাম করে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন ক্রেতারা। এবারের ঈদে তরুণীরা থ্রি-পিস বেশি কিনছে। তবে শাড়ি কেনা তরুণীদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। কিশোরীরা পার্টি স্কার্ট ছেড়ে ওয়েস্টার্ন পোশাকে বেশি আগ্রহী।

ধানমন্ডি থেকে আসা ক্রেতা সানজিদা শারমিন জানান, ঈদে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে ইস্টার্ন প্লাজায় আসা। এখানে নতুন ডিজাইনের কিছু শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। দামও কম।

ইস্টার্ন প্লাজার দ্বিতীয় তলায় পায়েল ফ্যাশন হাউসের মালিক শরীফ আহমেদ জানান, এবারে নতুন থ্রি-পিসের মধ্যে রয়েছে পার্স থ্রি-পিস। এমন নাম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, এই থ্রি-পিসগুলোর সঙ্গে ম্যাচিং করা একটি করে পার্স থাকে। এগুলোর দাম ৩-৪ হাজার টাকা।

এছাড়াও সুতি প্রিন্টের সালোয়ার-কামিজ এক থেকে আড়াই হাজার টাকা, পুতি ও পাথর বসানো বিভিন্ন কাজের থ্রি-পিস ২-৫ হাজার টাকা, গাউন থ্রি-পিস ৩-৮ হাজার টাকা, পাকিস্তানি লোন ও জয়-বিজয় ৩-৪ হাজার টাকা। একই ধরনের নানা ডিজাইনের থ্রি-পিসও কাছাকাছি দামে পাওয়া যাচ্ছে। তবে তরুণীদের পছন্দের তালিকায় ফ্লোর টাস ক্যাটাগরির কামিজ স্টাইলের থ্রি-পিস এবার বেশি চলছে।

একই ফ্লোরের সিয়াম শাড়ি দোকানের ইনচার্জ ইয়াসিন আরাফাত জানান, বুটিকস ২-১০ হাজার টাক, বাটুল সিল্ক ১৫০০-৪০০০ টাকা, কেউরা সিল্ক ১০-২৫ হাজার টাকা। এছাড়া আনন্দি, হেনা, তসর কাপড়ের বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়িও পাওয়া যাচ্ছে।

সুতি কাপড়ের উপর বিভিন্ন প্রিন্ট করা শাড়িও ঈদ উপলক্ষে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এবারের ঈদে দামি শাড়ি নয় মাঝামাঝি এবং কম দামের শাড়িই বেশি কিনছেন ক্রেতারা- বলে জানান তিনি।

মিরপুরের সালমার সঙ্গে কথা বলে একই তথ্য পাওয়া গেল। এই মার্কেট থেকে ৫ হাজার টাকা দামের একটি শাড়ি কিনেছেন তিনি। বলেন, এবার ঈদে নতুন ডিজাইনের শাড়ি কম। দাম অনুসারে পোশাকের মানও তেমন ভালো না। তবুও কিনতে হয়। তাই মায়ের পছন্দে একটা শাড়ি কিনলাম।

শপিংমলের তিন তলায় লিফটের সামনে স্নেহা কালেকশনে দেখা যায় হরেক রকম রেডিমেট থ্রি-পিস। এতে ডিসপ্লে করা রয়েছে লিলা ৫ থেকে ২০ হাজার, মিহিকা ৬-১২ হাজার, গোপী ৫-১০ হাজার, ঝিলিক ৪-৭ হাজার, রাশি ৭-১০ হাজার টাকা দামের বিভিন্ন ইন্ডিয়ান পোশাক।

এবারের ঈদে রেডিমেড পোশাকের মধ্যে ওয়েস্টার্ন গাউন ২০-৫০ হাজার পোশাকের চাহিদা বেশি। গত বছরের ন্যায় এবারের ঈদেও একই দাম রাখা হচ্ছে বলে দাবি করেন দোকানের কর্মকর্তা মো. রাজন।

তবে কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশি পোশাকের তুলনায় ইন্ডিয়ান পোশাক এবারের ঈদেও বাজার দখল করে রয়েছে।

ছোটদের পোশাকের রবিন ফ্যাশনে দেখা যায়, ছোট ছেলেদের জন্য জিন্সের গেঞ্জি সেট, সুতি গেঞ্জি সেট, শাট ও প্যান্টের সেটসহ নানা ধরনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। ছোট মেয়েদের জন্য রাখা হয়েছে ওয়েস্টার্ন পোশাকসহ বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক।

অন্যান্য ফ্লোরের তুলনায় চতুর্থ তলায় একটু বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেল। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে মেয়ে ও ছেলেদের হরেক রকম জুতা, সুজ, কেডস। এছাড়াও লেদারের বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা, সুজ, ব্যাগও সাজানো রয়েছে দোকানগুলোতে।

ক্লাসিক সুজ দোকানের ম্যানেজার অন্তর জানান, এবারের ঈদে পেন্সিল হিল ১৮০০-২০০০, স্লিপার ১২০০-১৫০০, বিন্দাস কেডস ১৫০০-২০০০ হাজার, ব্যালান্স হিল ১৫০০-২০০০, লেডিস বুটসহ ৩০০০-৪০০০ হাজার বাহারি ডিজাইনের সুজ পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ভিড়ের ভোগান্তিতে না পড়ার কারণে রোজার আগে থেকে ক্রেতার ভিড় রয়েছে।তবে দুদিনের বৃষ্টিতে কেনাকাটায় কিছুটা ভাটা পড়েছে।

মলের নিচতলায় বিভিন্ন ডিজাইনের চায়না থাইল্যান্ডের ব্যাগ ও পার্সের দোকান। বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ব্যাগের দাম ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ক্রেতাদেরও একই দাবি। সেখানে ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ডিজাইনের প্যান্ট, কম্বাইন হাফ শার্ট, ফুল শার্ট, জুট কটন পাঞ্জাবি, ইন্ডিয়ান সুলতান ব্র্যান্ড পাঞ্জাবি, মাইনোবর পাঞ্জাবিও পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও ঈদের আমেজে নিজেকে একটু ভিন্নভাবে সাজাতে মেয়েরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কসমেটিস, ছেলেরা পাঞ্জাবির সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ধুতিও কিনছেন বলে জানালেন শপের কর্মকর্তারা।

এমএ/জেএইচ/এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।