জঙ্গিবাদে অস্ত্র ও অর্থসহায়তায় গার্মেন্টস মালিক আটক


প্রকাশিত: ১১:১২ এএম, ১১ জুন ২০১৭

জঙ্গিবাদে অস্ত্র ও অর্থসহায়তার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে পোশাক তৈরি কারখানা ‘জিম টেক্স’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইমরান আহমেদকে আটক করেছে র‌্যাব।

র‌্যাবের দাবি, আটক ইমরান জেএমবির সারোয়ার-তামীম গ্রুপের শুরা সদস্য এবং ঢাকা মহানগর পশ্চিমের দাওয়াতী আমির। অস্ত্র ও বিপুল সংখ্যক জিহাদি বইসহ তার অপর এক সহযোগীকেও আটক করা হয়েছে।

রোববার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। গতকাল শনিবার গভীর রাতে ইমরান আহমেদ ও তার গাড়িচালক মো. শামিমকে আটক করা হয়।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান আহমেদ জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি জেএমবির সারোয়ার-তামীম গ্রুপের শুরা সদস্য এবং ঢাকা মহানগর পশ্চিমের দাওয়াতী আমির।

আটক ইমরানের জঙ্গিবাদে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ২০১২ সালে বন্ধু ওবায়েদের মাধ্যমে জসিম উদ্দিন রাহমানির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় ইমরানের। জসিম উদ্দিন রাহমানির মাধ্যমেই তার জঙ্গিবাদে প্রবেশ। এছাড়া জসিম উদ্দিন রাহমানির মাধ্যমে মিরপুর- ১০ এর মাওলানা আব্দুল হাকিমের সঙ্গেও তার পরিচয় হয়।

মাওলানা হাকিমের মাধ্যমে ইমরানের জেএমবি সারোয়ার-তামীম গ্রুপে অন্তর্ভুক্তি এবং নন্দিপাড়া কোরআন সুন্নাহ একাডেমির মসজিদের খতিব শায়েখ আরিফ হোসেনের সঙ্গে সখ্যতা হয়। এই শায়েখ আরিফ বর্তমানে জেএমবির সারোয়ার-তামীম গ্রুপের কেন্দ্রীয় দাওয়াত বিষয়ক শুরা বোর্ডের আমির বলে জানা গেছে।

মুফতি মাহমুদ খান আরও বলেন, ইমরান আহমেদ তার অফিস, গার্মেন্টস, ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে ডা. আসাদুল্লাহ গালিব, জসিমউদ্দিন রাহমানি, জুন্নুন সিকদার ও আইএস লোগো সম্বলিত জঙ্গিবাদি বই সংরক্ষণ করেন। ওই বই থেকে উস্কানিমূলক জঙ্গিবাদি সংক্রান্ত মতাদর্শ প্রচার করতেন। তিনি ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং বিদেশ থেকে জঙ্গিবাদি বই সংগ্রহ করতেন।

ইমরান আহমেদ র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জঙ্গিবাদে অর্থসহায়তা প্রদানে বেশকিছু তথ্য দেন। তিনি কয়েকজন জঙ্গি সদস্যকে পাসপোর্ট তৈরির জন্য আর্থিক সহায়তা করেন। এছাড়া জুন্নুন সিকদারকে বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি পাসপোর্ট তৈরিতেও অর্থ দেন। বিশেষ করে জেলখানায় আটক জেএমবি সদস্যদের পরিবারগুলোতে অর্থসহায়তা করতেন তিনি।

ইমরান আহমেদ ইতোপূর্বে র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার মাওলানা আব্দুল হাকিমকে জেল থেকে ছাড়ানোর জন্য তার স্ত্রীকে দুই লাখ টাকা দেন। তিনি জেএমবির সামরিক শাখার অস্ত্র ও বিস্ফোরক ক্রয়ের ব্যাপারে অর্থসহায়তা করেন বলেও র‌্যাবের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

র‌্যাবের হাতে আটক অপর সদস্য মো. শামীম মিয়া (২৯) পেশায় ইমরানের গাড়িচালক। তিনি ইমরানের জঙ্গিবাদি কার্যক্রমের সহযোগী বলেও দাবি করেন মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি বলেন, ইমরানের মাধ্যমে তিনিও জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হন। ইমরানের নির্দেশে জেএমবির বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের কাছে অর্থ ও পার্সেল পৌঁছে দিতেন শামীম।

আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক।

এআর/এমএআর/আরআইপি

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।