বিরিয়ানি নয়, ফখরুদ্দিনের হালিমেই টান
ভোজনপ্রেমীদের সামনে ফখরুদ্দিনের নাম নিলেই তাদের চোখের সামনে সুস্বাদু বিরিয়ানির চেহারা ভেসে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। শহরজুড়ে ফখরুদ্দিন বিরিয়ানির শাখাগুলোই তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেয় প্রতিদিন। তবে নিজেদের সেই বিরিয়ানিকেই ফেল করিয়ে দিচ্ছে ফখরুদ্দিনের হালিম। পবিত্র রমজানের ইফতার উপলক্ষে বিশেষ অায়োজনের মধ্যে এই অাইটেমটিতে ক্রেতাদের চাহিদা বেড়েছে। রমনা থানা সংলগ্ন ফখরুদ্দিনের ইফতার বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
বেলা একটা থেকেই শুরু হয়েছে বিক্রি। দিন যত শেষের দিকে বিক্রি ততই বাড়ছে জানালেন বিক্রেতারা। তারা জানান, রমজানের পুরো সময়টাতে বিরিয়ানির চেয়ে ইফতার সামগ্রির চাহিদা বেশি থাকে। এর মধ্যে হালিমের টান বেশি। এরপরই অাছে গরু, খাসির রেজালা এবং খাসির লেগ রোস্টের চাহিদা।
রমনায় ফখরুদ্দিন ইফতার বাজারের ম্যানেজার অানোয়ার হোসেন সোহেল জাগো নিউজকে বলেন, প্রথম রজমানে হালিমের চাহিদা অনেক বেশি ছিল। অাজও যতটুকু বিক্রি করেছি তার মধ্যে হালিমই বেশি। তবে মুরগির চেয়ে খাসির হালিমের চাহিদা অনেক।
বড় বড় তিন পাতিল হালিম দেখিয়ে বলেন, ৩টা না বাজতেই এক পাতিল হালিম বিক্রি শেষের পথে। ইফতারের অাগ পর্যন্ত দেখা যাবে অামরা দিয়ে পারছি না।
জানা যায়, ইফতার উপলক্ষে মোট ৪১টি অাইটেম বিক্রি করছে ফখরুদ্দিন ইফতার বাজার। এগুলোর মূল্য ৬ টাকা থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
ফখরুদ্দিন বাজারের মাঝারি সাইজের পাত্রে হালিমের মূল্য ৩৫০ টাকা। তবে এর বড় সাইজ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। এক কেজি গরুর রেজালার মূল্য ৮০০ টাকা। তবে এক কেজি খাসির রেজালা বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়।
খাসির এক পিস লেগ রোস্টের মূল্য ৯০০ টাকা। যেখানে একটি অাস্ত মুরগির মূল্য ৪৮০ টাকা। কেজিপ্রতি শিক কাবাবের মূল্য ১ হাজার ৪০০ টাকা।
এছাড়া অন্য অাইটেমগুলোর মধ্যে রয়েছে- খাসির কোর্মা, তেহারি, চিকেন স্টিক, চিকেন ক্রাম ফ্রাই, চিকেন রোস্ট, চিকেন চাপ, চিকেন টিক্কা, চিকেন ললি, কিমার চপ, জালি কাবাব, মুঠিয়া কাবাব, কিমা পুরি, কিমা ও পনির সমুচা, স্প্রিং রোল, ফিম ফিঙ্গার, ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, বেসন চপ, পাকোড়া, ভেজিটেবল রোল, কাটলেট, লুচি, পরটা, শাহী টুকরো, ফিরনী, জিলাপি, বুন্দিয়া, বাসমতির জর্দা, মিষ্টি দই, চাটনি, দই বড়া, বোরহানি ও লাবাং।
ফখরুদ্দিন ইফতার বাজারের কর্মী ফারুক হোসেন বলেন, ভোর থেকে এই ইফতার তৈরির কাজ শুরু হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে সব ইফতার পণ্য বিক্রির জন্য নির্ধারিত স্থানে সাজিয়ে ফেলা হয়।
পাশে রান্নার জন্য নির্ধারিত স্থানটি দেখিয়ে তিনি বলেন, ১০০ জন কর্মী মিলে এই রান্না ও বিক্রির কাজ করা হয়।
হালিমের ক্রেতা সিদ্ধেশ্বরীর রুহুল কুদ্দুস জাগো নিউজকে বলেন, ইফতারে এতটু বাড়তি অায়োজন রাখার চেষ্টা সবাই করে। অার হালিম রোজার অংশ হয়ে উঠেছে। পরিবারের সদস্যদের অাবদার মেটাতে হালিম নিতে বেরিয়ে পড়েছি।
খাসির রেজালা কিনছিলেন তাসনিম হুদা। এই কর্মজীবী মা জাগো নিউজকে বলেন, অফিস থেকে একটু অাগেই বের হয়েছি ছেলের প্রিয় ইফতার নিতে। প্রথম রোজাটা থাকতে না দিলেও ৭ বছরের ছেলে অামার অাজ রোজা রেখেছে। তাই বাড়িতে তৈরি ইফতারের পাশাপাশি বাইরে থেকে কিছু কিনছি।
ম্যানেজার সোহেল বলেন, বড় বড় ইফতার পার্টির জন্যও ইফতার সরবরাহ সুবিধা অাছে। সেক্ষেত্রে অাগেই অর্ডার দিতে হবে।
জেপি/জেএইচ/জেআইএম