স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজল রাজধানী
গরমের তেজ যেন আর সইছিল না। দম যেন যায় যায় অবস্থা। গ্রীষ্মের উত্তাপে জনজীবন যে বিপর্যস্ত, তা যেমন ঘরেও টের পাইয়ে দিচ্ছিল, ঠিক বাইরেও। প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ায় পুড়ছিল দেশ, পুড়ছিল রাজধানী।
গরমে মন, মাটি পুড়ে পুড়ে যেন ছারখার অবস্থা। কখন মিলবে বৃষ্টি? কখন জুড়াবে প্রাণ? ‘বৃষ্টির অপেক্ষা’ রূপ নিয়েছিল, ঠিক যেন প্রিয়জনের অপেক্ষার মতোই। যার পরশে উষ্ণ হৃদয় শীতল হয়ে যাবে মুহূর্তেই।
অপেক্ষার সিঁড়ি পেরিয়ে অবশেষে এসেছে বৃষ্টি। বৃষ্টির শীতল পরশে প্রশান্তির বন্যা এখন রাজধানীতে। রাজধানীবাসী অসহ্য গরমের অসহনীয় বেদনা যেন মুহূর্তেই ভুলে গেছে খানিক বৃষ্টির ছোঁয়াতেই।
টানা দাবদাহে জীবন ওষ্ঠাগত ছিল গত দুই সপ্তাহ ধরে। গ্রীষ্মের সূর্য নেমে এসেছিল একেবারে মাথার ওপর। বাতাসের গতিও ছিল ঝিমিয়ে পড়ার মতো। দিনের উত্তাপ ছিল রাতবেলাতেও। নগরবাসীর বৈদ্যুতিক পাখার বাতাস মিললেও, তাতে শান্তি মিলছিল না। আবার লোডশেডিংয়ের কারণে যান্ত্রিক নগরের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল।
গরমে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি নানা রকম অসুখও দেখা দেয় মানুষের মাঝে। জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়ার প্রকোপের কারণে হাসপাতালগুলোয় তিল ঠাঁই ছিল না। বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধদের মাঝে গরমের প্রভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল বলা যায়।
বৃষ্টির কোনো সংবাদ না মিললেও গণমাধ্যমে গরম আর জনজীবন নিয়ে নানা খবর গুরুত্ব দিয়ে আসছিল। প্রকৃতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃষ্টির জন্য আকুতি প্রকাশ করে আসছিলেন।
রাজধানীতে এমন বৈরী আবাহাওয়ার রূপ পাল্টে যায় শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই। দুপুরেই ইশানকোণে মেঘের ঘনঘটা লক্ষ্য করা যায়। বিকেলে দমকা হাওয়া বয়ে যায় নগরজুড়ে। এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও বৃষ্টির খবর মিলতে থাকে। এদিন বিকেলে ও সন্ধ্যার পরেই রাজধানীর কোনো কোনো অংশে হালকা বৃষ্টি হয়।
হোক না হালকা, তবুও অবসান ঘটেছে চাতকের অপেক্ষার।
এএসএস/জেডএ