হাল ধরার কেউ নেই বেহাল ছাত্রদলের


প্রকাশিত: ১২:৩৭ পিএম, ১০ মে ২০১৫

আন্দােলন সংগ্রামে বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বেহাল দশা। সাত মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ কমিটি আদৌ পূর্ণতার রুপ পাবে কি-না সেটাও স্পষ্ট নয়। গ্রেফতার ও হামলা-মামলার অভিযোগ এনে এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির মধ্যে ১৫৩ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল।

ঘোষিত কমিটিতে ৩৪ জনকে সহ-সভাপতি, ৩৫ জনকে যুগ্ম সম্পাদক, ২৭ জনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ২৮ জনকে সহ-সাংগঠনিক ও ২৬ জনকে সম্পাদকমণ্ডলীর পদে পদায়ন করা হয়।

পরবর্তী টানা সাত মাস পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোর কমিটি গঠন করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা বাস্তাবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

অবশ্য রাজিব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানের হাতে নেতৃত্ব দেয়ায় সেসময় বিক্ষোভ করেন পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতারা। পরবর্তীতে বিএনপির হাই-কমান্ড নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ছাত্রদল সূত্র জানায়, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। বিএনপির একটি পক্ষের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ছাত্রদলের কমিটিতে যোগ্য ও ত্যাগীদেরকে অবমূল্যায়ণ করার কারণে সংগঠনটি রাজপথে সক্রিয় হতে পারেনি বলেও দাবি করেছে সূত্রটি।

এদিকে বিভিন্ন ইউনিট কমিটিগুলোতে বিগত সময়ের আন্দােলন সংগ্রামে রাজপথের মূল্যায়নকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদাে জিয়া। সে লক্ষ্যে একটি গ্রুপ কাজও শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

তবে গত ৫ জানুয়ারি অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার পর ছাত্রদলের ১৫৩ জন নেতার মধ্যে অন্তত ২০ জন পদধারী নেতাকেও রাজপথে দেখা যায়নি। বিভিন্ন ইউনিটের পদপ্রত্যাশী ছাত্রদলের কর্মীরাই খালেদা জিয়ার আহ্বানে রাজপথে নেমেছিলেন।

এদিকে তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শেষ হওয়া ও অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা ছাড়াই অচল হলেও ছাত্রদলের বেশির ভাগ নেতার মোবাইল ফোন এখনাে বন্ধ রয়েছে। অনেক নেতা কোথায় রয়েছেন তারও কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

একটি সূত্রের দাবি, ত্যাগী ও যোগ্যদেরকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করার কারণে আন্দােলনে যেমনিভাবে সফলতার মুখ দেখা সম্ভব হয়নি। তেমনিভাবে ছাত্রদলের মেরুদণ্ড ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। তাই ছাত্রদলেক করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।

এদিকে আন্দােলন সংগ্রামে সফলতার মুখ দেখতে হলে প্রকৃত রাজপথের পরীক্ষিত নেতাদেরকে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবিও করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদবঞ্চিত কয়েকজন নেতা।

ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন জাগো নিউজকে জানান, রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠনে কাজ শুরু হলেও ছাত্রদলের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে এখনো কাজ শুরু হয়নি।

তিনি বলেন, বর্তমানে নতুন করে বিভিন্ন কমিটি গঠনের চিন্তা ভাবনা করছে। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে চাইলেও একটি পক্ষের কারণে এ প্রক্রিয়াতে এগিয়ে যাওয়া কখনাে সম্ভব হয়নি।

তবে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি ও সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকুর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এমএম/বিএ/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।