ভাস্কর্যের কাছে গণমাধ্যম কর্মীদের যেতে পুলিশের বাধা


প্রকাশিত: ১০:৫১ এএম, ২৬ মে ২০১৭

দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে নিয়ে এ্যানেক্স ভবনের পেছনে রাখা হয়েছে। তবে এর কাছে কোনো গণমাধ্যম কর্মীকে যেতে দেয়া হচ্ছে না।

এর আগে সকালে বেশ ক’টি টেলিভিশন ভাস্কর্য অপসারণের সংবাদ সরাসরি প্রচার করলে সোস্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এরপর থেকে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশের সব ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। মাজার সংলগ্ন গেটটি খোলা রাখা হলেও সেখানে অবস্থান নেয় পুলিশ।

জানা গেছে, ভাস্কর্য সরানোর সংবাদ প্রতিটি গণমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করলে পুলিশের উপর চাপ বেড়ে যায়। ফলে সকাল ১১টার পর থেকে আদালত চত্বরে প্রবেশে কড়াকড়ি শুরু করে পুলিশ। রমনা বিভাগ পুলিশের দাবি, উপরের চাপে তারা কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে ছাত্র ইউনিয়ন, উদীচীসহ বাম সংগঠনগুলো ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। মিছিল নিয়ে তারা আদালত চত্বরে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার সেল ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়।

দুপুর দেড়টার দিকে মাজার রোড দিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা আদালত চত্বরে প্রবেশকালে বাধা দেয় পুলিশ। তবে ছবি না তোলার শর্তে জাগো নিউজ, ডেইলিসহ বেশ কয়েকটি মিডিয়ার সাংবাদিক ভেতরে প্রবেশ করলেও এ্যানেক্স ভবনে সামনে ফের আটকে দেয়া হয়। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের দাবি, রমনা বিভাগ ও শাহবাগ থানা পুলিশের অনুমতি ছাড়া ভেতরে প্রবেশ নিষেধ।

শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান জানান, আদালতের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী আদালত ও এর আশপাশ এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ কারণে আদালতের ভেতরে বিশেষ করে অপসারিত মূর্তির কাছে কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না।

এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে। ভোর ৪টার দিকে ভাস্কর্য অপসারণ শেষ হয়। রাতে বেশ কিছু শ্র‌মিককে ভাস্কর্য‌টি সরিয়ে নেয়ার কাজ কর‌তে দেখা যায়। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের মূল প্রবেশ পথে বিপুলসংখ্যক পুলিশও মোতায়েন ছিল। এছাড়া ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ার জন্য বড় একটি ট্রাকও দেখা গেছে।

ভাস্কর্য সরানোর খবর পেয়ে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে আসেন স্থপতি মৃণাল হক। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

মৃণাল হক বলেন, ‘এরপর নির্দেশ আসবে, ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাঙা হোক, ‘রাজু ভাস্কর্য’ ভাঙা হোক, ‘ঘোড়ার গাড়ি’ ভাঙা হোক… মাফ চাই। আমি কিছু বলতে চাই না। আমার হাত-পা বাঁধা।’

সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে স্থাপন করা এ ভাস্কর্য নিয়ে ইসলামিক দলগুলো বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজেও ভাস্কর্যটি অপসারণের জন্য কোর্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

জেইউ/এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।