ভাস্কর্য ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ


প্রকাশিত: ০৮:৫৮ এএম, ২৬ মে ২০১৭

সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে বাম ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো।

শুক্রবার জুমার নামাজের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে বাম সংগঠনগুলো। নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের বাইরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠন।

বাম সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ মিছিল অবশ্য পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ও জলকামান থেকে জল ছিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।

ঘটনাস্থল থেকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম কর্মী আরিফ নূরসহ ৪ জনকে আটকও করে পুলিশ।

police

পুলিশ বলছে, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভাঙলে তাদের থামানোর চেষ্টা করা হয়।

উল্টোদিকে বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ, অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতি তৈরির কোনো উদ্দেশ্য তাদের ছিল না।

দুপুর ১২টার পর উদ্ভূত এ পরিস্থিতি ১টা নাগাদ স্বাভাবিক হয় আসে।

এরপর জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ধর্মীয় সংগঠনগুলো।

সেখান থেকে ভাস্কর্য অপসারণের বিরোধিতাকারীদের আল্লাহ-রাসূলের ‘শত্রু’ আখ্যায়িত করা হয়। 

ISLAM

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহসচিব এ টি এম হেমায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল মক্কায় মূর্তি অপসারণের মধ্যে দিয়ে কাজ শুরু করেছেন। ঢাকা শহর মসজিদের শহর। এ শহরে মূর্তি থাকতে পারে না। হাইকোর্টের মতো জায়গায় অন্য ধর্মের মূর্তি কোনোভাবে থাকতে পারে না।’

সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

বেশ কিছু দিন ধরে গ্রিক দেবী থেমিসের মূর্তিটি সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল হেফাজতে ইসলাম।

হেমায়েত উল্লাহ বলেন, যারা বিরোধিতা (ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার) করছে তারা নগণ্য। পীর-ওলামা-মাশায়েখরা যদি রাস্তায় বের হয় তবে তাদের জায়গা হবে বঙ্গোপসাগরে। 

ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইমতিয়াজ আলম বলেন, এ ‘মূর্তি’ কোনোভাবে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে থাকতে পারে না। এটা কোনো কাজে আসবে না।

মূর্তি এবং ভাস্কর্যের মধ্যে পার্থক্য আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভাস্কর্য থাকবে জাদুঘরে। মূর্তি বাইরে থাকার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে।

রাতেই সুপ্রিম কোর্টের সামনে যান ভাস্কর মৃণাল হক। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এরপর নির্দেশ আসবে, ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাঙা হোক, ‘রাজু ভাস্কর্য’ ভাঙা হোক, ‘ঘোড়ার গাড়ি’ ভাঙা হোক.. মাফ চাই। আমি কিছু বলতে চাই না। আমার হাত-পা বাঁধা।’

সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের এই ভাস্কর্য নিয়ে ইসলামি দলগুলো বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজেও ভাস্কর্যটি অপসারণ করার জন্য কোর্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

জেইউ/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।