আমরা আজ হার মেনে গেলাম : মৃণাল হক
‘একটি বিশেষ গোষ্ঠীর বিশেষ চাপে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্য অপসারণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা আজ হেরে গেলাম। এর থেকে বড় পরাজয় আর কিছু আছে?’
বৃহস্পতিবার রাতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের সময় শোকে-ক্ষোভে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন ভাস্কর্যটির নির্মাতা মৃণাল হক।
মৃণাল হক বলেন, ‘কাল সারাদিন আমাকে এই ভাস্কর্য অপসারণ করতে চাপ দেয়া হয়েছে। আজ স্বাধীনভাবে কথা বলা যাচ্ছে না। এখন কেউ কারও প্রয়োজনে তাদের স্বার্থে ভাস্কর্যটি সরাচ্ছে। পাঁচ মাস আগে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। এটি বানাতে আমার সময় লাগে প্রায় দুই মাস। করার সময়ও চাপে করেছি আবার সরানোর সময়ও চাপে। আমি আসলে...’
তিনি বলেন, ‘আমরা আজ হার মেনে গেলাম। আমরা বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে হার মানলাম। এ কারণে আমরা স্বাধীনতা এনেছিলাম? এদের বিরুদ্ধেই আমরা আন্দোলন করে স্বাধীনতা এনেছি। আমার মনে হচ্ছে আমরা সেই স্বাধীনতাটা ভোগ করতে পারছি না, পারব না। আজকে তারাই বিজয়ী। এই রাজাকার-আলবদর যারা আজকে আমাদের সাংস্কৃতি, পড়ালেখা সবকিছুর বিরোধিতা করে আসছে তাদের কাছে আমরা হার মানব কেন?’
আপনি কি মনে করেন ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলতে কোনো প্রভাব ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এত ভেতরে যেতে চাই না। আমি অতি সাধারণ একটা মানুষ। এত বড় কথা বলার সাহস আমার নেই। সোজা কথা যেটা বুঝি সেটা হচ্ছে স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশিদের জন্যে গালে জুতার বাড়ি খাওয়ার মতো এটা একটা খারাপ ব্যাপার। যার থেকে লজ্জা আর হতে পারে না। অনেক স্বাধীনতাকামী মানুষ এটার পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে। আজকে আমি বক্তব্য দেব কাল থেকে আমার রাস্তায় চলা বন্ধ। আমাদের এত বড় একটা পরাজয় আর হতে পারে না।’
মৃণাল হক প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এর থেকে বড় পরাজয় আমাদের আর কিছু আছে? আমরা আজ হার মেনে গেলাম। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় জুতার বাড়ি খাওয়া।’
কোর্ট থেকে ভাস্কর্যটি সরাতে কে বলেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মৃণাল হক বলেন, ‘যারা এটার অথরিটি। যারা বানাতে বলেছেন- তারাই সরাতে বলেছেন।’
‘আমার একটা অনুরোধ সবার কাছে- যাতে সবখানে একটা শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে। শান্তি নষ্ট করে কোথাও কিছু না ঘটে।’
এমএসএস/বিএ/এমএস