রেইন ট্রি এমডির জিজ্ঞাসাবাদ চলছে
শুল্ক ফাঁকি, অনুমোদন ছাড়া বিদেশি মদ বিক্রি এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে রাজধানীর বনানীর আলোচিত ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ মোহাম্মদ আদনান হারুনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
জিজ্ঞাসাবাদ করছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর শরিফুল হাসান।
তলবি নোটিশে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শুল্ক গোয়েন্দা সদর দফতর কার্যালয়ে হাজির হন রেইনট্রি হোটেলের এমডি শাহ মোহাম্মদ আদনান হারুন।
এ সময় তার সঙ্গে আসেন চাচা মজিবুল হক কামাল, ফুফা আকবর হোসেন মঞ্জু, ফুফাতো ভাই হাসিব রুমি ও আইনজীবী জাহাঙ্গীর কবির।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শুল্ক গোয়েন্দার যুগ্ম পরিচালক (জয়েন ডিরেক্টর) মোহাম্মদ শফিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, তিনটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুল্ক ফাঁকি, অনুমোদন ছাড়া বিদেশি মদ বিক্রি এবং মানি লন্ডারিং।
তিনি বলেন, হোটেলটি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। তাছাড়া হোটেলটির বারের কোনো অনুমোদন না থাকলেও মদ রাখা ও বিক্রি করে আসছিল।
গত ১৪ মে রেইন ট্রি হোটেলে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দাদের একটি দল। অভিযানে ১০১নং কক্ষে ১০ বোতল মদ পাওয়া যায়। কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ বারের লাইসেন্স দেখাতে না পারেনি। প্রথমে হোটেল কর্তৃপক্ষ জব্দকৃত মদকে `জুস` হিসেবে উল্লেখ করে। পরে সংবাদ সম্মেলন করে হোটেল থেকে মদ উদ্ধার হয়নি মর্মে দাবি করে।
তবে গতকাল সোমবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কেমিকেল টেস্টের রিপোর্টে জব্দকৃত বোতলের নমুনা পরীক্ষায় ১৩.৪৯ শতাংশ অ্যালকোহল পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। ওই রিপোর্টে জব্দকৃত বোতলকে ‘বিদেশি মদ` হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, টাকার পরিমাণ অল্প হওয়ায় মানি লন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে পার পেলেও পেতে পারেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। তবে মদ বিক্রি ও শুল্ক ফাঁকির বিষয়ে পার পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তিনি আরও জানান, ডেপুটি ডিরেক্টর শরিফুল হাসান রেইন ট্রির এমডিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে গতকাল সোমবার সকালে শুল্ক গোয়েন্দার তলবি নোটিশের কার্যকারিতে ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পরে বিকেলে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন সু্প্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওই আদেশের ফলে হোটেল কর্তৃপক্ষকে আজ (মঙ্গলবার) শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সদর কার্যালয়ে হাজিরা দেয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা ছিল না।
জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় গত ১৭ মে রেইন ট্রি হোটেলের মালিক শাহ মো. আদনান হারুনের হাজিরা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে এক মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ২৩ মে বেলা ১১ টায় সাক্ষাতের সময় ধার্য করা হয়।
জেইউ/এসআর/জেআইএম