জিয়ার স্মৃতি বেচে সরকারের আয় দিনে ৩ হাজার টাকা

বর্তমান সরকারের আমলেও বেশ ভালোই বিক্রি হচ্ছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্মৃতি। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার স্থান চট্টগ্রামের পুরনো সার্কিট হাউস এখন জিয়া স্মৃতি জাদুঘর। প্রতিদিন বহু মানুষ এই জাদুঘর পরিদর্শন করছে। জাদুঘরে প্রবেশে জনপ্রতি নেয়া হয় ২০ টাকা। এভাবে প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার টাকা সরকারের আয় হচ্ছে। জাদুঘরের কর্মকর্তারা জাগো নিউজকে এমনটিই জানিয়েছেন।
সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের কাজীর দীঘি এলাকার ওই জাদুঘরে সরেজমিনে দেখা গেছে, জিয়াকে হত্যা করার স্থানটি পরিদর্শন করছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন। সেখানে জিয়ার বাল্যকাল থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত স্মৃতি নিয়ে মোট ১৭টি গ্যালারি রয়েছে। সেই গ্যালারিতে জিয়াউর রহমানকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
জিয়াকে হত্যা করার স্থানে বুলেটের আঘাত ও রক্তাক্ত দেয়ালও সংরক্ষণ করা হয়েছে। শেষ গ্যালারির নাম দেয়া হয়েছে অন্তিম যাত্রা। সেখানে জিয়াকে বহনকারী স্ট্রেচার রয়েছে। রাজধানীর ক্রিসেন্ট লেকে জিয়ার কবরের আদলে একটি রেপ্লিকাও রয়েছে। যেখানে দাঁড়ালে রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে খুন হয়ে যাওয়া একজন মানুষের প্রতিকৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। হৃদয়টাও সিক্ত হয়। জিয়াউর রহমান তখন একজন ভিকটিম হয়ে চোখে ভাসেন। যার দেহ বুলেটের আঘাতে ছিন্নভিন্ন।
জিয়া স্মৃতি জাদুঘরে কর্মরত আনসার সদস্য মাসুম আলী সেখানে কর্মরত এক আদিবাসী নিরাপত্তাকর্মীকে দেখিয়ে বলেন, উনি এখানকার নিয়মিত কর্মী। তিনি ৩০ হাজার টাকা বেতন পান। খালেদা জিয়া এসব ব্যবস্থা করে গেছেন।
জাদুঘরের এক টিকিট বিক্রেতা জানান, প্রতিদিন তিন হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়। আর ছুটির দিনে টিকিট বিক্রি বেড়ে চার হাজার টাকাও হয়। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকে। তবে বন্ধ থাকে বৃহস্পতিবার।
জিয়া জাদুঘরটির পাশেই নতুন করে সার্কিট হাউস করা হয়েছে। আর একপাশে রয়েছে বিশ্বখ্যাত হোটেল র্যাডিসন ব্লু।
উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম সফরকালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের ৪ নং কক্ষে উঠেন। ৩০ মে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হন। সে বছরের ৩ জুন সার্কিট হাউসকে একটি জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য সরকারি প্রস্তাব গৃহীত হয়। ১৯৯৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের উদ্বোধন করা হয়। এখানে জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত বেশ কিছু সামগ্রী সংরক্ষিত রয়েছে। এখানে একটি লাইব্রেরিও আছে। এখন এটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। জাতীয় জাদুঘরের একটি শাখা।
আগে এটি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস হিসেবে ব্যবহার হতো। ১৯১৩ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার সার্কিট হাউসটি নির্মাণ করেছিলেন।
এইচএস/জেডএ/আরআইপি