ধর্ষণের ঘটনা সত্য বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতীয়মান
রাজধানীর বনানীতে একটি আবাসিক হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের ঘটনা সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।
কৃষ্ণপদ রায় বলেন, আমরা শুক্রবার ভোরে আসামিদের পেয়েছি। ফলে বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারিনি। আমরা ১০ দিনের রিমান্ডে এনে তাদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের অভিযোগ সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
তিনি বলেন, মামলাটি নিয়ে দেশবাসী উন্মুখ হয়েছিল। মামলাটি তদন্তে ডিএমপি সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছে। মামলাটি ডিএমপির ওয়েমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেন্সটিগেশন ছাড়াও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) ও গুলশান পুলিশ ছায়া তদন্ত করেছে। পাশাপাশি তদন্ত সংস্থাগুলোর সঙ্গে আইজিপি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বিশেষ টিম সমন্বিত করেছেন। এরই ফলশ্রুতিতে সাফাত ও সাদমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সেই রাতে কোনো ভিডিও হয়েছিল কিনা। ভিডিও হলেও সেটি এখনো আসামিদের সংরক্ষণে আছে কিনা এবিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কেউ ভিডিও করে থাকে সেটা অন্য কেউ ছেড়ে দেয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা, সেগুলো মাথায় রেখে তদন্ত চলছে।
যে অস্ত্রটি ব্যবহার করে দুই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে সেটি এখনো উদ্ধার করা যায়নি। মামলার তদন্তে যদি আমরা এজাহার বহির্ভূত কারো সংশ্লিষ্টতা পাই তাহলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
বাদীর আগ্রহের কারণে মামলার তদন্তভার ওমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন সেন্টারে দেয়া হয়েছে। তবে মামলাটি অতি সংবেদনশীল হওয়ায় তদন্ত কমিটির কাজের সুবিধার্থে আরেকটি সহায়ক তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। কমিটির প্রধান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায়। অন্যান্যরা হচ্ছেন, ডিবি উত্তরের উপ-কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম, গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ ও ওমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন সেন্টারের ডিসি ফরিদা ইয়াসমিন।
কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, বনানী থানার দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা আছে কিনা সেটি খুঁজতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভিকটিমরা যেসব অভিযোগ করেছেন সেগুলো তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তারা প্রতিবেদন দেবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়েই বন্ধুদের যোগসাজশে ধর্ষণের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই তরুণী। ওই ঘটনায় ৪০ দিন পর ৬ মে (শনিবার) সন্ধ্যায় বনানী থানায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৮।
মামলার আসামিরা হচ্ছেন- সাদনান সাকিফ, তার বন্ধু সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের ড্রাইভার বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী (নাম পাওয়া যায়নি)।
মামলা দায়েরের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ওই দুই তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ধর্ষণের আলমত সংগ্রহ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ। তিনি জানান, ধর্ষণের ঘটনাটি প্রায় দেড় মাস আগের, সে জন্য আদৌ কোনো আলামত পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
এআর/এআরএস