আত্মগোপনে সোমবার সিলেটের রিজেন্ট পার্কে যান সাফাত


প্রকাশিত: ১০:৫৩ এএম, ০৯ মে ২০১৭

বনানীর ‘রেইন ট্রি’ হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ও পলাতক আসামি সাফাত আহমেদ আত্মগোপনের জন্য সোমবার সিলেটের ‘রিজেন্ট পার্ক’ রিসোর্টে যান। তার সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন।

রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে সোমবার বিকেল ৫টার দিকে তারা রুম বুকিংয়ের জন্য যান। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিসোর্টের ইনচার্জ হেলাল আহমেদ, ম্যানেজার মো. বখতিয়ার ও রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার মো. মোবারক।

তারা জানান, সিফাত ও তার সঙ্গীদের সঙ্গে কোনো লাগেজ ছিল না। বুকিংয়ের জন্য আইডি কার্ড চাওয়ায় সাফাত তা দিতে রাজি হননি। এ নিয়ে রিজেন্ট পার্কের রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার মোবারকের সঙ্গে সাফাতের বাগবিতণ্ডা হয়।

রুম বুকিং না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তারা রিসোর্ট ত্যাগ করেন বলে জানান মোবারক।

মোবারক জাগো নিউজকে জানান, সাফাতের চেহারা চেনা চেনা লাগলেও নিশ্চিত হতে পারিনি যে তিনিই ধর্ষণ মামলার আসামি। তা না হলে পুলিশে খবর দিতাম।

তিনি আরও জানান, রিসোর্টটি পূর্ণাঙ্গভাবে এখনও চালু হয়নি। মাত্র ১১টি রুম বুকিং দেয়ার সুযোগ আছে। রিসোর্টে রিসিপশন নেই। রেস্টুরেন্টের রিসিপশনেই বুকিং কাজ সম্পন্ন হয়। সোমবার বিকেলে সাফাতসহ চারজন রেস্টুরেন্টে আসেন।

প্রথমে সাফাত রুমের ভাড়া জানতে চান। মোবারক উত্তর দেন, পাঁচ থেকে ২০ হাজার টাকা।

তখন সাফাত বলেন, আমাদের হাইয়েস্ট (সর্বোচ্চ) দামের রুম দরকার, কয়েক দিন থাকব। রুম বুকিংয়ের জন্য সাফাতের আইডি কার্ড চান মোবারক। কিন্তু তিনি বলেন, ‘আইডি দিতে পারব না, নাম লিখে বুকিং রাখেন।’

মোবারক বলেন, ‘আইডি না দিলে বুকিং হবে না।’ এ সময় ক্ষুব্ধ সাফাত বলেন, ‘কেন বুকিং হবে না?’ এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সাফাত চলে যান।

মোবারক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের মালিকের কড়া নির্দেশনা আছে, কাপল (দম্পতি) ছাড়া কাউকে ভাড়া না দিতে। তাদের কোনো লাগেজও ছিল না। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা তাদের রুম বুকিং দেইনি।’

এ বিষয়ে রিজেন্ট পার্কের ইনচার্জ হেলাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা এমনিতেই যুবকদের বুকিং অ্যাভোয়েড (এড়িয়ে যাওয়া) করি। লাগেজ আর আইডি না থাকায় আমরা তাদের বুকিং নেইনি। তারা যাওয়ার পর স্টাফরা আলোচনা করছিল যে, তাদের একজনের সঙ্গে সাফাতের চেহারার মিল রয়েছে। পরে মিডিয়ায় সাফাতের ছবি দেখে বিষয়টি নিশ্চিত হই।’

উল্লেখ্য, সাফাতের বাবা ও মা উভয়ের জন্মস্থান সিলেটে। তাদের সেখানে বাড়ি রয়েছে।

গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়েই বন্ধুদের যোগসাজশে ধর্ষণের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই তরুণী। ওই ঘটনায় ৪০ দিন পর ৬ মে (শনিবার) সন্ধ্যায় বনানী থানায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৮।

মামলার আসামিরা হচ্ছেন- সাদনান সাকিফ, তার বন্ধু সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের ড্রাইভার বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী (নাম পাওয়া যায়নি)।

এআর/এমএআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।