জ্বালানি তেলের দাম কমালে বিপিসি পুনরায় লোকসানি প্রতিষ্ঠান হবে


প্রকাশিত: ১২:৩২ পিএম, ০৭ মে ২০১৭

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দেশে ইতিমধ্যে গত ১ ও ২৫ এপ্রিল জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য গত এক বছর ধরে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এরপরও জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পুনরায় লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এবং ঋণ করে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে।

রোববার জাতীয় সংসদে পিরোজপুর-৩ আসনের এমপি মো. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাস্ততার নিরিখে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমা ও বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধি সম্ভব হয় না। ইতোপূর্বে ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানি তেল বিক্রয় করায় ২৭ হাজার ৪১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার সরকারি ঋণের দায় এখনো বিপিসির উপর রয়ে গেছে।

তিনি দাবি করেন, জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করা হলে তার সুফল সাধারণ জনগণ সরাসরি ভোগ করতে পারে না। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের পর আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পরবর্তীতে মূল্য সমন্বয় করা হলে তখন সাধারণ জনগণের উপর অধিক প্রভাব পড়বে। অতঃএব সামগ্রিক বিবেচনায় আপাতত জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করা সমচীন হবে না।

চাহিদার ৫৬ লাখ টনের ৫২ লাখ টনই জ্বালানি আমদানি
পটুয়াখালী-৩ আসনের এমপি আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে যে পরিমাণ জ্বালানি রয়েছে তা চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয়। দেশে বছরে মোট জ্বালানি তেলের চাহিদা ৫৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৪.২৭ লাখ মেট্রিক টন অভ্যন্তরীণ উৎস হতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ ৫১.৭৩ লাখ মেট্রিক টন বিভিন্ন গ্রেডের জ্বালানি তেল আমদানিপূর্বক চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। বিগত ৯ বছরে ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭৭ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে উত্তোলিত হচ্ছে প্রায় দুই হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ দেশে দৈনিক প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। জ্বালানি তেলের চাহিদার সিংহভাগই আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। বিপিসি বিভিন্ন দেশের ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রেডের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে চাহিদা পূরণ করে আসছে। তবে অকটেন, পেট্রোল এবং কেরোসিনের চাহিদার সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পূরণ হচ্ছে।

২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭৭ মেট্রিক টন ডিজেল, জেট-১, কেরোসিন, অকটেন, ফার্নেস অয়েল ও ক্রুড অয়েল আমদানি করা হয়েছে।

এইচএস/এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।