পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইন অনুমোদন
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইন, ২০১৫’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে আইনটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
পাশাপাশি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনায় একটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে কাজ চলছে। বর্তমানে এটি ভালো পর্যায়ে চলে এসেছে। এ ব্যাপারে রাশিয়া সরকার আর্থিক এবং কারিগরি সহযোগিতা দেবে। এ জন্য রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি ও ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটি একটি উচ্চ প্রযুক্তিঘন প্রকল্প। অন্য চুক্তির জন্য দু’টি পক্ষ থাকলেও এ চুক্তির জন্য তৃতীয় পক্ষ হলো আইএইএ। পরমাণু সংক্রান্ত কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করতে গেলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত নীতিমালা মেনে চলতে হয়। সেফটি ও সিকউরিটির জন্য আইএইএর গাইডলাইনসগুলো অনুসরণ করতে হবে। সে প্রেক্ষাপটে প্রথমে একটি আইন তৈরি করতে হয়। আইনি কাঠামো ছাড়া বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আইনের আওতায় একটি কোম্পানি গঠিত হবে।
ইতোমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে প্রাক্কলিত ব্যয় পাঁচ হাজার ৮৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার এক হাজার ৮৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং রাশিয়া প্রকল্প সহায়তা দেবে চার হাজার কোটি টাকা। ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়িত হবে প্রকল্পটি। ২০২১ সালের মধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি অব বাংলাদেশ’ গঠনের প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি মালিকানায় কোম্পানি গঠন করতে গেলে মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগে। সাধারণত কোম্পানি গঠনের জন্য বিশেষ বিধানের দরকার হয় না। তবে যেহেতু এটি বিশেষ প্রকল্প সেজন্য একটি সুদৃঢ় আইনি কাঠামো দরকার। আলাদা আইনের মাধ্যমে কোম্পানি গঠনের কথা বলা রয়েছে।
আইনে কোম্পানি গঠনের বিধান, পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের কতোটুকু কর্তৃত্ব, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সরবরাহকারী দেশের সহযোগিতা ও বাস্তবায়নকারী বাংলাদেশের দু’টি সংগঠন গঠনের কথা বলা হয়েছে। অ্যাটোমিক এনার্জি কমিশন হবে ওনার অর্গানাইজেশন, আর প্রস্তাবিত নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি অব বাংলাদেশ হলো অপারেটিং অর্গানাইজেশন।
কোম্পানি গঠন, ভেন্ডার কান্ট্রি, দু’টি সংস্থা চিহ্নিতকরণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, পরিচালনা ও নিরাপত্তার বিধান উল্লেখ রয়েছে আইনে।
এর আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে আইনের খসড়া ও কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব তোলা হয়েছিল বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
অন্য কোম্পানির মতো পরিচালনার জন্য একটি বোর্ড থাকবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। কোম্পানির পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব।
এসএ/বিএ/পিআর/আরআই