অভিবাসন খাতের উন্নয়নে ২০ সুপারিশ
বাংলাদেশের অভিবাসন খাতে উন্নতি, স্বচ্ছতা, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জবাবদিহিতা এবং অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণে ২০টি সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিদেশে জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও চাকরির নিশ্চয়তার জন্য সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কার্যকরী ভূমিকা পালনেরও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
মহান মে দিবস উপলক্ষে সোমবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত মিডিয়া ডায়ালগ অনুষ্ঠানে এসব সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ১৯৭৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এক কোটি ৭২ লাখ ৯ হাজার ৩৯১ জন নারী ও পুরুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পেশায় চাকরি নিয়ে গেছেন। তাদের পাঠানো রেমিটেন্স থেকে জিডিপি অর্জিত হয়েছে নয় শতাংশ। অথচ অনেক ক্ষেত্রে তাদের স্বার্থ রয়ে গেছে উপেক্ষিত। অভিবাসী কর্মীর শ্রম-ঘামে উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
পরে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা এবং এ খাতে স্বচ্ছতা ও উন্নয়নে ২০টি সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। সুপারিশগুলো হলো-
অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা, অভিবাসন ব্যয় শূন্যে নামিয়ে আনা, দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা, বিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, ভিসা বাণিজ্য বন্ধ করা, অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হলে ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন না করা ও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রত্যেক ডেমোতে আরবিট্রেশন সেল প্রতিষ্ঠা ও আইনি সহায়তা প্রদান, রেমিটেন্স পাঠানোর ব্যয় কমানো, ওয়েজ আর্নার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব রাখা, নারী অভিবাসীর অধিকারে আইএলও কর্তৃক গৃহীত গৃহ শ্রমিকের সনদ ১৮৯ অনুস্বাক্ষর করা, বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে নারী অভিবাসী শ্রমিকদের সহায়তায় লেবার এটাচিতে প্রয়োজনীয় লোকবল বাড়ানো ও আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন, দূতাবাসের কূটনীতিকদের শ্রম অভিবাসন সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা ও ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা, অভিবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক সনদের বাস্তবায়ন, দ্বি-পক্ষীয় দরকষাকষিসহ প্রয়োজনে বহুপক্ষীয় চুক্তি, সরকারি কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি, অভিবাসীদের নিরাপদ অভিবাসন সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান, প্রবাসফেরত সব অভিবাসীকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক রিইন্টিগ্রেশনে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কর্মসূচি গ্রহণ, অভিবাসী শ্রমিক অধিকারে জাতিসংঘ, মানবাধিকার কাউন্সিল, বিশ্ব ফোরাম, সার্ক রিজিওনাল ফোরামসহ সব আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশকে সক্রিয় করা এবং শ্রম অভিবাসনে সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে জাতীয় পর্যায়ের কমিটি কিংবা কমিশন গঠন।
ওয়্যারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এবং রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টসের (আরবিএম) আয়োজনে মে দিবসের এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রোখসানা ইয়াসমিন ছুটি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) জাবেদ আহমেদ, বাংলাদেশ জনশক্তি রফতানি সংস্থার (বায়রা) যুগ্ম মহাসচিব-২ শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান, রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টসের (আরবিএম) সভাপতি ফিরোজ মান্না, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শিপা হাফিজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) পরিচালক ড. সি আর আবরার।
জেইউ/জেডএ/এসআর/এমএস