ডিজিটাল মেশিনেও থামছে না বিমান কর্মচারীদের জালিয়াতি


প্রকাশিত: ০৬:৪৭ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৭

কর্মচারীদের অভিনব জালিয়াতির কাছে হার মেনেছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টার্মিনাল ভবনে স্থাপিত ডিজিটাল পদ্ধতির পাঞ্চ মেশিন। হাজিরার কাজে ব্যবহৃত মেশিনটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন কাজ না করেও বেতন তুলছেন তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র বিয়ষটি নিশ্চিত করেছে।  

সূত্র বলছে, অফিসে না এলেও ডিজিটাল পাঞ্চ মেশিনে অনেকে তাদের আইডি কার্ড (পরিচয়পত্র) পাঞ্চ করেন নিয়মিতই!

এছাড়া ডিউটি ৮ ঘণ্টা বাধ্যতামূলক হলেও অনেকে কর্মস্থলে থাকেন ৪ ঘণ্টা! কেউ আবার ২ ঘণ্টা কর্মস্থলে থেকেছেন বলেও জানা গেছে।

জানা যায়, একব্যক্তিই জালিয়াতি করে ২০ সহকর্মীর আইডি কার্ড পাঞ্চ করেন ওই মেশিনে। বছরের পর বছর এ জালিয়াতি করে এলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

তবে সম্প্রতি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে কর্মচারীদের এ জালিয়াতি। বিমান কর্মকর্তাদের নজরদারির সময় গোপন কামেরায় ধরা পড়েছেন ‘সংঘবদ্ধ চক্রে’র ২ সদস্য।

তারা হলেন-বিমানের জুনিয়র অ্যাকাউন্টস অফিসার বেলাল হোসেন তালুকদার (স্টাফ আইডি পি-৩৬১৯০) এবং মো. নাছির (স্টাফ আইডি সি-৪২৫)।

সিসি টিভি ফুটেজ দেখে প্রাথমিকভাবে এই দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্তও করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল  রাত ১০ টায় বেলাল হোসেন তালুকদার ও মো. নাছির সহ আরো একজন (ফুটেজে অষ্পষ্ট) মিলে প্রায় ২০ জন অনুপস্থিত কর্মচারীর আইডি কার্ড মেশিনে  পাঞ্চ করেন।

যদিও এই ২০জনের কেউ-ই অফিসে আসেননি; কেউ কেউ এলেও ২ বা ৩ ঘণ্টা কাজ করে কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন।

বিমান কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার সুযোগে অসাধু কর্মচারীরা এধরনের হীন কাজ করছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।

সূত্র জানায়, অভিযুক্ত যে দুইজনের বিষয়টি ধরা পড়েছে,  তারা জানিয়েছেন- বিমানের গ্রাহক সেবা বিভাগের পরিচালক আতিক সোবাহান ও মহাব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম হাওলাদারের নির্দেশে এ কাজ করেছেন।

আতিক সোবাহানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়ম বহির্ভুতভাবে গত ৫ ফেব্রুয়ারি এক সমন্বয় সভায় কর্মচারীদের ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিমান। ওভারটাইমের বিষয়ে এ ধরনের নিয়ম বিমানের নিয়মে আছে কিনা- তা জানতে পরিচালক (গ্রাহক সেবা) আতিক সোবাহানকে একাধিক বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিমানের পরিচালক (প্রশাসন) এম মোমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বিমানে এখন থেকে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। ইতোমধ্যে অনিয়ম দূর করে শৃঙ্খলা ফেরাতে কার্ড পাঞ্চের পরিবর্তে ফেস আইডি মেশিন চালু করা হয়েছে।
‘এছাড়া মনিটরিং বাড়ানোর জন্যে সর্বত্র সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ব্যবস্থাপনাতেও তদারকি বাড়ানো হয়েছে।’

আরএম/এমএমএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।