সাক্ষ্য আইন সংশোধনের পক্ষে প্রধান বিচারপতি


প্রকাশিত: ০৯:১৭ এএম, ০১ মে ২০১৫

আদালতগুলোতে মামলাজট কমাতে হলফনামার মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণের সুযোগ রেখে সাক্ষ্য আইন সংশোধনের পক্ষে মত জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের বিচারিক আদালতগুলোতে ২৮ লাখ মামলা বিচারাধীন থাকার তথ্য জানিয়ে তা দ্রুত নিষ্পত্তিতে এ মত প্রকাশ করেন।

বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রচলিত আইনে বিপুল সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তি করা বিচারকদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য সাক্ষ্য আইন সংশোধন করা যায় কি না, তা আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।

হলফনামার মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণে আইন সংশোধনে আইন প্রণেতা, আইন বিশারদসহ প্রবীণ আইনজীবীদের মতামত নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, শিগগির এ বিষয়ে একটি সেমিনার করা হবে। প্রধান বিচারপতি মনে করেন, দেওয়ানি মামলায় ইস্যু গঠন এবং ফৌজদারি মামলায় চার্জ গঠনের আগে বাদী ও বিবাদীদের হলফনামা গ্রহণ করে, সেখান থেকে তর্কিত বিষয় নির্ধারণ করে শুধু ওই বিষয়ের ওপর জেরা করলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হবে।

বিচার প্রক্রিয়া গতিশীল করে বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশের সব আদালতকে ডিজিটালাইজডে করার ওপরও জোর দেন তিনি। এতে ঝুলে থাকা অনেক মামলা গতি পাবে বলে তার মত। সাক্ষী না পাওয়া, সাক্ষীর বিদেশে যাওয়া, পুলিশি সাক্ষীর বদলি ইত্যাদির কারণে অনেক ফৌজদারি মামলা আদালতগুলোতে আটকে আছে বহু দিন ধরে। প্রত্যেক আদালত ডিজিটালাইজড হলে সাক্ষীর ভয়েস রেকর্ডিং ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ করা যাবে, বলেন বিচারপতি এস কে সিনহা।

বিচার বিভাগের অনিয়ম দূর করতে এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে একটি পরামর্শ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ অভিযোগ করলে এক সপ্তাহের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করা হবে।

বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবী সংখ্যাধিক্যের কথা বিবেচনা করে অদূর ভবিষ্যতে পুরান ঢাকা থেকে নিম্ন আদালত কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের প্রস্তাবও করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, বিচার বিভাগ কাগজ কলমে স্বাধীন। কিন্তু প্রশাসনিক বিভাগের সাহায্য না পাওয়ায় আমরা স্বাধীনতার কাছে যেতে পারিনি।

ঢাকা মেট্রোপলিটন বার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিচারপতি এস কে সিনহা। প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ায় তাকে সংবর্ধনা দিতে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা, মুখ্য বিচারিক হাকিম মাহবুবার রহমান, মুখ্য মহানগর হাকিম বিকাশ কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা মেট্রোপলিটান বারের সভাপতি আসকির খানে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদারও উপস্থিত ছিলেন।

বিএ/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।